তেহরান: কেমন লাগে সব সময় মাথা ঢাকা দিয়ে থাকতে? তাও ইচ্ছের বিরুদ্ধে? ইরানে মহিলাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া মৌলবীদের হিজাব ফতোয়ার বিরুদ্ধে প্রতীকী হিজাব পরছেন জনাকয়েক প্রগতিশীল পুরুষও। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা সে সব ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।


১৯৭৯-তে ইরানে বিপ্লবের পর থেকে মহিলাদের সব অধিকার কাটছাঁট করা হয়েছে, মহিলাদের পোশাক বাতলে দিয়েছে গোঁড়া নীতি পুলিশ, অত্যাবশ্যক হয়েছে হিজাবে মাথা ঢাকা। নিজের ইচ্ছে না থাকলেও সমাজের কড়া শাসনের ভয়ে ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় এই অনুপ্রবেশ মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে ইরানের নারীসমাজ। কিন্তু এবার তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন জনাকয়েক পুরুষও। স্ত্রী, বান্ধবী ও মহিলা সহকর্মীর সঙ্গে সহানুভূতি দেখাতে তাঁরাও পরেছেন হিজাব। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন সেই ছবি।



অনলাইন এই ক্যাম্পেনের নাম মাই স্টিলদি ফ্রিডম। এটি চালু করেছেন মাসিহ আলিনেজাদ নামে এক ইরানি সমাজকর্মী। তিনি জানিয়েছেন, শৈশব থেকে বড় হয়ে ওঠা পর্যন্ত বাধ্যতামূলক হিজাব পরিধান করতে হয়েছে তাঁদের। প্রতি পদে মনে হয়েছে, তাঁদের সম্মানহানি হচ্ছে। পুরুষরা জন্ম থেকে দেখে আসছে, চারপাশের মহিলা হিজাবে মাথা ঢাকা। তাদের কাছে এটাই স্বাভাবিক। শুধু মহিলারাই জানেন, এভাবে জোর করে মাথা ঢেকে সমাজের চাপিয়ে দেওয়া সম্মানরক্ষার প্রচেষ্টা কী কষ্টকর ও হাস্যকর। তাই তথাকথিত সম্মানরক্ষার এই পোশাক শুধু মেয়েদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পুরুষদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওযার জন্য তিনি এই অনলাইন ক্যাম্পেন চালু করেছেন।



ক্যাম্পেনে যোগ দেওয়া পুরুষরা বলছেন, তিনি মাত্র কয়েক মুহূর্তের জন্য হিজাব ধারণ করেছিলেন, শুধু এটুকু বুঝতে, জীবনভর মাথা ঢাকা দিয়ে রাখতে তাঁর স্ত্রীর কেমন লাগে। তা হলই বা কয়েক মুহূর্তের জন্য। মৌলবাদ ও পুরুষতন্ত্রের কড়া নিগড়ে যদি সংবেদনশীলতা ও ভালবাসা এভাবেই ফুল ফোটায়, তাতে ক্ষতি কী।