সেন্ট পিটার্সবার্গ: সেন্ট পিটার্সবার্গের সম্মেলন মঞ্চে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, অস্ট্রিয়া, মলডোভার নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে ঘুরিয়ে পাকিস্তানের কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার প্রসঙ্গ টানলেন নরেন্দ্র মোদী। সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক সাহায্য, অস্ত্রশস্ত্র ও যোগাযোগের সরঞ্জাম পাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিতে আন্তর্জাতিক মহলকে ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী।


সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের ভাষণে তিনি বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট ঘটনায় আটকে গেলে চলবে না। সন্ত্রাসবাদ মানবতার শত্রু। এর মোকাবিলায় জোট গড়তে হবে আমাদের সবাইকে। এটাই বর্তমান সময়ের দাবি।

শ্রোতাদের আসনে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব জেনারেল আন্তোনিও গুয়েতেরেজের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ৪০ বছর হয়ে গেল, রাষ্ট্রপুঞ্জে সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা, সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থকদের নিয়ে প্রস্তাব পড়ে রয়েছে। কিন্তু কোনও আলোচনা, সিদ্ধান্তই হল না। সব শুধু মুখের কথা।

পাকিস্তানের প্রতি প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত করে মোদী বলেন, সন্ত্রাসবাদীরা তো অস্ত্র বানায় না, কিন্তু কিছু দেশ তাদের তা সরবরাহ করে। আবার সন্ত্রাসবাদীরা মুদ্রাও ছাপায় না, তবে কয়েকটি দেশ বেআইনি অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ দিয়ে তাদের তহবিল ভরে। সন্ত্রাসবাদীদের নিজেদের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা, সোস্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক নেই, কিছু দেশ সেগুলি দিয়েও ওদের সাহায্য করে।

প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, এখন আমাদের ভাল বা খারাপ সন্ত্রাসবাদের বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমার জঙ্গি, তোমার জঙ্গি--এই বিচার চলবে না। প্রশ্নটা এখন মানবতার। সেভাবেই সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করতে হবে।

গত ৪০ বছর ধরে ভারত সন্ত্রাসবাদের শিকার, হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ তার বলি হয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্ব সন্ত্রাসবাদকে স্রেফ আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হিসাবেই দেখে এসেছে। ৯/১১-র হামলার পর দুনিয়া হঠাত্ বুঝতে পারল কী ভয়ানক বিপদ সন্ত্রাসবাদ।

সন্ত্রাসবাদ সীমানা মানে না, সব দেশকে যৌথ ভাবে এর মোকাবিলা করতে হবে বলেও অভিমত জানান প্রধানমন্ত্রী।

পুতিনও বলেন, সন্ত্রাসবাদ কোনও কাল্পনিক বিষয় নয়। ভারত সন্ত্রাসবাদের ফলে বড় সমস্যায় পড়েছে। সন্ত্রাসবাদ সবার কাছেই সমান বিপদ, মোদীর এই মত সমর্থন করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের একে রুখতে একজোট হতে হবে।