কুইংডাও: সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে দুদিনের সফরে শনিবার চিনের কুইংডাও পৌঁছেই প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন নরেন্দ্র মোদী। চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নানা দিক নিয়ে কথা হল। চিনের ইউহান শহরে দুই শীর্ষ নেতার অঘোষিত বৈঠকের ৬ সপ্তাহ বাদে দু দেশই যে সম্পর্কে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সচেষ্ট, তারই প্রতিফলন আজকের বৈঠক। ইউহানে তাঁদের আলোচনা হয়েছিল নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা ও গত বছরের ডোকলাম অচলাবস্থার পর দুদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে আরও ভাল বোঝাপড়া, সমন্বয় তৈরির ব্যাপারে। আজকের বৈঠকে ব্রহ্মপুত্র বিষয়ক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। এছাড়া ভারত থেকে চিনে বাসমতি ছাড়া অন্যান্য চাল রফতানি করার বিষয়েও একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বৈঠকের পর ট্যুইট করে বলেছেন, ‘এবারের এসসিও-র আয়োজক প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক ও নানা আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের আলোচনার মাধ্যমে ভারত-চিন বন্ধুত্ব আরও বলিষ্ট হবে।’

এদিন অপরাহ্নে মোদী কুইংডাও নামার কিছুক্ষণ বাদেই তাঁর সঙ্গে করমর্দন করেন শি। একসঙ্গে তাঁরা ছবিও তোলেন। ইউহানে শি-র সঙ্গে আলোচনার কথা স্মরণ করেন মোদী, বলেন, ভারত ও চিনের জোরদার, স্থিতিশীল সম্পর্ক একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল বিশ্ব গঠনে অনুপ্রেরণা দিতে পারে। বৈঠকের পর বিদেশসচিব বিজয় গোখেল বলেছেন, ইউহানে বৈঠকের ধারা বজায় রেখেই ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকের আগে দুতরফের কর্মকর্তারাও বলেছিলেন, গত ২৭-২৮ এপ্রিল ইউহানে তাঁদের অঘোষিত সামিটে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির কতদূর রূপায়ণ হল, তা খতিয়ে দেখতে পারেন মোদী, শি। সেবার তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, পরস্পরের সেনাবাহিনীকে 'কৌশলগত পথ' দেখাবেন, যাতে ভবিষ্যতে ডোকলামের মতো পরিস্থিতি এড়ানোর প্রয়াসের অঙ্গ হিসাবে আস্থা, বোঝাপড়া গড়তে তারা যোগাযোগ জোরদার করে। পরস্পরের অর্থনীতি, জনসাধারণের স্তরে সম্পর্ক বাড়ানোর উপায় নিয়েও কথা হয়েছিল তাঁদের।
ডোকলামের ঘটনায় দুটি দেশের সম্পর্ক মার খেয়েছিল। গত বছরের ১৬ জুন থেকে টানা ৭৩দিন ভারত ও চিনের সেনা জওয়ানদের সংঘাত বহাল ছিল। বিতর্কিত এলাকায় চিনা সেনাদের রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভুটান ও চিনের মধ্যে ডোকলামকে ঘিরে বিরোধ আছে। যদিও ডোকলাম ইস্যু পিছনে ফেলে সম্পর্ক নতুন করে জোড়া লাগানোর প্রয়াসও পাশাপাশি চলছে।

ডোকলাম ছাড়াও পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জয়েশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জকে দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে ভারতের উদ্যোগ, তাতে চিনের বাধা, ভারতের পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর সদস্য হওয়ার উদ্যোগে চিনের বিরোধিতা, চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ সহ আরও নানা ইস্যুতে ক্ষতি হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক।