ওয়াশিংটন: ভারতবর্ষের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতা দিলেন নরেন্দ্র মোদী। অধিবেশন কক্ষে ঢুকতেই সকলে উঠে দাঁড়িয়ে দিলেন হাততালি। বক্তৃতার মাঝেও মোদী পেলেন হাততালি। আবার শেষে হাততালি। মোদীর বক্তৃতায় কখনও বন্ধুতার বার্তা, কখনও রসিকতার ছোঁয়া।
এর আগে ভারতবর্ষের চারজন প্রধানমন্ত্রী এমন সুযোগ পেয়েছেন। ১৯৪৯ সালে সদ্য স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে ভাষণ দিয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার পেয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। ১৯৯৪ সালে মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ দেন নরসিংহ রাও। ২০০০ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং ২০০৫ সালে মনমোহন সিংহ।
এদিন প্রবল করতালির মধ্যেই মার্কিন কংগ্রেসে প্রবেশ করেন মোদী। প্রধানমন্ত্রী ঢুকতেই সকলে এক এক করে তাঁর সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য এগিয়ে এলেন। কেউ কেউ দূরে  থাকায় তাঁদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়লেন মোদী। সবমিলিয়ে তখন গোটা কক্ষ মোদী-ময়।
২০০৫ সালে মনমোহন সিংহের পর ২০১৬-তে নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন সংসদের যৌথ অধিবেশনে বক্তৃতার শুরুতেই নরেন্দ্র মোদী বার্তা দেন, আমেরিকার মতোই ভারতবর্ষও বিশ্বাস করে, সব মানুষ সমান। এ কথা বোঝাতে গিয়ে মোদির গলায় কখনও উঠে এল আব্রাহাম লিঙ্কনের কথা।  কখনও আবার মোদির বক্তৃতায় স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গাঁধী থেকে মার্টিন লুথার কিং।
নরেন্দ্র মোদীর এ দিনের বক্তৃতা মাঝে বার বার উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দেন মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা। কখনও মোদীর গলায় ইতিহাসের কাহিনি। কখনও বর্তমানের সংবাদ। কখনও ভবিষ্যতের বার্তা। এ সবের মাঝে হাল্কা রসিকতা। ভারতবর্ষে যেমন সংসদ, তেমনই আমেরিকায় কংগ্রেস। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হল হাউস অব রিপ্রেসেনটেটিভ এবং উচ্চকক্ষ হল সেনেট। এদিন মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষের মধ্যে পার্থক্যকে রসিকতার ছলে মোদী বলেন, শুনেছি আপনাদের দুই কক্ষের মধ্যে সম্পর্ক মধুর। আমাকে বলা হয়েছে, আপনারা দ্বিমতের জন্য পরিচিত। এই বিষয়ে অবশ্য আপনারা একা নন। আমাকেও একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়।
গুরুগম্ভীর আবহে মাঝে মাঝেই হাসির রোল ওঠে, যখন মোদী বলেন, শুনেছি আপনাদের দেশে ৩ কোটি মানুষ যোগব্যায়াম করেন। তবে, এর জন্য আমি যোগার ওপর সত্ব চাপাব না।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এটা নরেন্দ্র মোদীর চতুর্থ মার্কিন সফর। বারাক ওবামার দেশে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, আমেরিকার আদর্শ সহযোগী হতে পারে ভারতই।