শিকাগো: শরীর ‘ঘামে’ ভিজে, মুখে ‘আল্লাহ’ নাম। এই অবস্থায় অবিরাম চলছে ‘টেক্টিং’। তাই সন্দেহের বশে এক পাক-মার্কিন দম্পতিকে বিমান থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মার্কিন বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে ফ্রান্সের রাজধানীতে।


সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, প্যারিস থেকে সিনসিনাটির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য মার্কিন ডেল্টা এয়ারলাইন্সের বিমান ধরেন নাজিয়া ও ফয়জল আলি। নাজিয়ার অভিযোগ, বিমান ছাড়ার আগে পরনের স্নিকার্স খুলে তিনি নিজের অভিভাবকদের একটি মোবাইল-বার্তা সবে পাঠানো শেষ করে কানে হেডফোন গুঁজেছিলেন।

মহিলার দাবি, এমন সময় বিমানের এক মহিলা ক্রু সদস্য তাঁদের কাছে এসে বিমান থেকে নেমে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এর সঙ্গে সঙ্গেই বিমানের এক গ্রাউন্ড স্টাফ তাঁদের এসে জানান, তাঁরা এই বিমানে যেতে পারবেন না। তাঁরা যেন অবিলম্বে বিমান থেকে নেমে যান। দম্পতিকে নামিয়েই তবে বিমানটি গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দেয়।

অন্যদিকে, ডেল্টার তরফে জানানো হয়েছে, ওই মহিলা ক্র্যু সদস্য বিমানচালকের কাছে গিয়ে এই দম্পতির বিষয়ে অভিযোগ করেন। এরপরই চালক এটিসি-কে বিষয়টি জানান। যারপরই গ্রাউন্ড স্টাফ নিরাপত্তার কারণে চলে আসেন।

বিমান সংস্থার দাবি, ওই ক্র্যু সদস্য জানিয়েছেন, মুসলিম মহিলা যাত্রী মাথায় স্কার্ফ পরে ফোন করছিলেন। অন্যদিকে, পাশে বসা ব্যক্তিটি ভীষণ ঘামছিলেন। তিনি আরও দাবি করেন, সামনে আসার পর, ফয়জাল নিজের ফোনটি লুকানোর চেষ্টাও করেন। এমনকী, তিনি ওই দম্পতিকে আল্লাহ বলে ডাকতেও শুনেছেন।

এই অভিযোগ শুনে নাজিয়ার পাল্টা দাবি, ডেল্টা এয়ারলাইন্স ‘ইসলাম-ভীতি’-তে আক্রান্ত। তিনি আরও জানান, বিমানের মধ্যে প্রায় ৪৫ মিনিট বসেছিলেন তাঁরা। ফলে, ঘাম হওয়াটাই স্বাভাবিক। তিনি আরও জানান, ন’ঘণ্টার ফ্লাইটে স্নিকার্স খোলা যেতেই পারে।

নাজিয়ার দাবি, বিমানবন্দরেই তাঁদের প্যারিস সফর সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে কোনও সন্দেহজনক তথ্য উঠে না আসায় তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে দাবি নাজিয়ার। পরে, অন্য বিমানে করে সিনসিনাটি ফেরেন এই মুসলিম দম্পতি।

এদিকে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে মার্কিন পরিবহণ দফতরে অভিযোগ দায়ের করেছে এক মার্কিন মুসলিম সংগঠন। এই ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে বিমান সংস্থা। পাশাপাশি, তারা ওই দম্পতির বিমান ভাড়া ফিরিয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।