নয়াদিল্লি: মহাকাশের অন্য প্রান্ত থেকে ক্রমাগত ধেয়ে আসা একটি রেডিও সিগন্যালের খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা। রহস্যজনক ওই সিগন্যাল প্রতি ১৬ দিন অন্তর ফিরে ফিরে আসছে। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে মানুষ একা কি না-- অচিরেই কি অবসান ঘটতে হতে চলেছে বিজ্ঞানীদের সেই কৌতূহলের?
পৃথিবীতে যেমন মানুষ রাজত্ব করছে, ঠিক তেমন ব্রহ্মাণ্ডের অন্য কোনও গ্রহে কি রয়েছে আমাদের মত জীব? দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা এই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে। জানতে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে মানুষের মত উন্নত বা উন্নততর কোনও ভিনগ্রহে কোনও জীব রয়েছে কি না। এই নিয়ে বিশ্বে অনেক তত্ত্ব রয়েছে। মহাকাশ-বিজ্ঞানীরা অনেক চেষ্টা করেছেন, এখনও করছেন। যদিও, এতদিন পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট উত্তর মেলেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাবলি বিজ্ঞানীদের মনে নতুন করে আশার সঞ্চার করতে বাধ্য।
খবরে প্রকাশ, কানাডিয়ান হাইড্রোজেন ইন্টেনসিটি ম্যাপিং এক্সপেরিমেন্ট (চাইম)-এ আওতাধীন ফাস্ট রেডিও বার্স্ট (এফআরবি) প্রোজেক্টে কর্মরত বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি লক্ষ্য করেন, পৃথিবী থেকে ৫০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ক্রমাগত বার্স্ট (রেডিও সিগন্যালের ধারা) আসছে।


২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে এই নির্দিষ্ট ধারা লক্ষ্য করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানান, মহাকাশ ভেদ করে এফআরবি (মিলিসেকেন্ড-দৈর্ঘ্যের রেডিও-তরঙ্গ) ঢেউ ধেয়ে আসছে। বিজ্ঞানীরা আরও জানান, তরঙ্গগুলি একটানা চারদিন আসছে। তারপর ১২ দিনের বিরতি। আবার গোটা প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু হচ্ছে। এই ঘটনা এখন বিশ্বের তাবড় তাবড় মহাকাশ-বিজ্ঞানীদের ধন্দে ফেলে দিয়েছে।
সাধারণতভাবে, একক রেডিও বার্স্ট একবারই আসে। তা বারবার হয় না। কিন্তু, এফআরবি-র মূল চরিত্রই হল উচ্চশক্তি-সম্পন্ন ছোট আকারের রেডিও তরঙ্গের বার্স্ট একাধিকবার পাঠানো। আর যখন সেগুলি বারবার ফিরে আসে, তখন একটি ক্লাস্টার (তরঙ্গের একটি আস্ত ঝাঁক) এবং স্পোরাডিক (এলোমেলো ও প্রচণ্ড বিক্ষিপ্ত আকার) ধারণ করে থাকে।
এফআরবি-র উৎস কোথায় তার খোঁজ করতে বহু চেষ্টা চালিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত প্রত্যেক বার্স্ট একটি নতুন জায়গার সন্ধান দিচ্ছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রথম বার্স্টটি যেখান থেকে এসেছিল, সেই ‘এফআরবি ১২১১০২’- এর ঠিকানা ছিল একটি ছোট ছায়াপথ। ওই ছায়াপথে নক্ষত্র ও ধাতব বস্তু রয়েছে। আবার, ‘এফআরবি ১৮০৯১৬’ -এর ঠিকানা আমাদের নিজস্ব ‘মিল্কি ওয়ে’ বা আকাশগঙ্গার মতো কোনও চক্রাকৃতি ছায়াপথ।
বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক ধারনা, কোনও একটি ছায়াপথের বাইরে একটি নক্ষত্র বা কোনও বস্তু তার কক্ষপথে দ্রুতগতিতে চক্কর খাচ্ছে। যে কারণে এধরনের তরঙ্গ সেখান থেকে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে।