যে নক্ষত্রকে ঘিরে ৩টি গ্রহ পাক খাচ্ছে, তার নাম ট্রাপিস্ট ১। পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই গ্রহে সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানে পৌঁছে যেতে আপনার লাগবে এই চার কোটি চল্লিশ লক্ষ বছরের মত।
কিন্তু গোটা সৌরমণ্ডলটির অবস্থান, যেভাবে সেখানে বড় আকারের গ্রহের সমন্বয় ঘটেছে, তাতে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ব্যাপারে প্রচুর গবেষণার সুযোগ রয়েছে। ওই সব গ্রহের পরিবেশ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখলে জীবনের সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়া বিচিত্র নয়।
নাসা জানাচ্ছে, এই আবিষ্কারে পরিষ্কার, দ্বিতীয় পৃথিবীর সন্ধান পেতে চলেছে তারা। এই প্রথম একটিই নক্ষত্রকে পাক খাওয়া এতগুলি পৃথিবীর আকারের গ্রহের সন্ধান মিলল। বিজ্ঞানীরা এখন চেষ্টা করছেন, গ্রহগুলির তাপমাত্রার খোঁজ পেতে ও জলের অস্তিত্ব আছে কিনা জানতে, কারণ প্রাণের অস্তিত্বের জন্য তরল জল থাকা জরুরি।
যে ট্রাপিস্ট ১ নক্ষত্রকে ঘিরে ৭ গ্রহ ঘুরছে, তার ব্যাস সূর্যের মাত্র ৮ শতাংশ। ফলে গ্রহগুলির আকার আরও বড় বলে মনে হচ্ছে। পৃথিবীর টেলিস্কোপে দেখা যাচ্ছে, ছোট্ট নক্ষত্রের চারপাশে বিশাল আকৃতির গ্রহ ঘুরতে থাকায় ট্রাপিস্ট ১-এর আলো বেশিরভাগ সময়েই আটকে দিচ্ছে তারা। সব মিলিয়ে গোটা ব্যবস্থা অত্যন্ত আঁটোসাঁটো ও সংহত, এখন তরল জল ও প্রাণের সন্ধান মিললেই ষোল কলা পূর্ণ হয়।
যদিও বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এখন যদি ওই গ্রহগুলিতে প্রাণ নাও থাকে, ভবিষ্যতে তার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ট্রাপিস্ট ১-এর বয়স অন্তত ৫০০ মিলিয়ন বছর, এখনও অন্তত ১০ ট্রিলিয়ন বছর বাঁচবে নক্ষত্রটি। আমাদের সূর্য সে তুলনায় বুড়ো থুত্থুড়ে, ১০ বিলিয়ন বছরের জীবন অর্ধেকটা পার করে দিয়েছে সে। অর্থাৎ আর কয়েক বিলিয়ন বছর পর সূর্যের জ্বালানি যখন ফুরিয়ে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে এই সৌরমণ্ডল, ট্রাপিস্ট ১ তখনও থাকবে নেহাত এক শিশু নক্ষত্রের চেহারায়। এত ধীরে ধীরে এর হাইড্রোজেন পুড়ছে, যার ফলে এর জীবন অনেক দীর্ঘ। ফলে প্রাণের অঙ্কুর ফুটে ওঠার প্রচুর সময় পাচ্ছে এ।