বেজিং ও কলকাতা: রাষ্ট্রসংঘে জয়েশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ করার ইস্যুতে ‘জোরালো তথ্যপ্রমাণের’ দাবি করায় এবার চিনকে একহাত নিল ভারত। নয়াদিল্লির তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, আজহারের কার্যকলাপের প্রমাণ অনেক আগে থেকেই নথিভুক্ত করা রয়েছে। ভারতের দায় নেই নতুন করে প্রমাণ দেওয়ার।
শীর্ষ চিনা আধিকারিকদের সঙ্গে বেজিংয়ে বৈঠকে বসেছিলেন বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ভারতের উদ্বেগ যথাযথভাবে বেজিংয়ের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।
মাসুদ আজহারকে বিশ্ব-সন্ত্রাসবাদী হিসেবে ঘোষণার প্রশ্নে জয়শঙ্কর বলেন, শুধু ভারত নয়। অন্যান্য দেশও তার বিরুদ্ধে একমত। এপ্রসঙ্গে তিনি জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবেদনকে সমর্থন জানিয়েছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স।
অন্যদিকে, মাসুদকে নিষিদ্ধ করার আগে তার বিরুদ্ধে ‘জোরালো তথ্যপ্রমাণ’ পেশ করার যে দাবি তুলেছে চিন, সেই নিয়ে বিদেশসচিব বলেন, জয়েশ সংগঠনটাই রাষ্ট্রসংঘের নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। ফলে, সেটাই সবচেয়ে বড় প্রমাণ। ও (মাসুদ) কী কী করেছে, তা বহু আগে থেকেই নথিভুক্ত রয়েছে।
জয়শঙ্কর যোগ করেন, দ্বিতীয় কথা হল, এবার মাসুদকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব এবারে ভারত রাখেনি। তাই প্রমাণ পেশ করার দায় ভারতের নয়। তাছাড়া, যারা মাসুদকে নিষিদ্ধ করতে চাইছে, তারা এই নিয়ে যথেষ্ট নিশ্চিত।
নিষিদ্ধ করা নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ যে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি বলে দাবি করেছে চিন। এদিন তার জবাবও দিয়েছেন জয়শঙ্কর। জানান, ঐকমত্য হয়নি, কারণ চিন রাজি হয়নি।
পাশাপাশি, পরমাণু জ্বালানি-সরবরাহকারী গোষ্ঠীতে (এনএসজি) ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান জয়শঙ্কর। বলেন, চিন জানিয়েছে, তারা ভারতের অন্তর্ভুক্তিতে তাদের আপত্তি নেই। যদিও, প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের অবস্থান ভিন্ন। বিদেশসচিবের দাবি, তিনি বেজিংকে জানান, ওই গোষ্ঠীর অধিকাংশ দেশ ভারতের অবস্থানকেই সমর্থন করছে।
এদিকে, জয়শঙ্করের এই বিবৃতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতায় চিনের কনসাল জেনারেল মা ঝানয়ু দাবি করেন, মাসুদকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে চিন বাধা দিচ্ছে বলে যে খবর প্রকাশিত হচ্ছে তা ‘বিভ্রান্তিকর’। তিনি যোগ করেন, চিন বাধা দিচ্ছে না। তাঁর মতে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কিছু সমস্যা রয়েছে, বেজিং চায় যাতে তার সমাধান হয়।