নিউইয়র্ক:  সূর্যের বায়ুমণ্ডলের পরিস্থিতি অনুসন্ধানে প্রথমবারের জন্যে সেখানে রোবট পরিচালিত মহাকাশযান পাঠাতে চলেছে নাসা। আগামী বছরই খুব সম্ভবত এই মহাকাশযান রওনা দেবে সূর্যের উদ্দেশ্যে। তবে সূর্যের মাটিতে ওই মহাকাশযানের অবতরণ সম্ভব নয়। তাই সূর্যর থেকে ষাট লক্ষ কিলোমিটার দূরত্ব থেকে সেখানকার বায়ুমণ্ডলের ওপর পরীক্ষা চালাবে এই মহাকাশযান।


এর আগে নাসার তরফে চাঁদ, মঙ্গল, এমনকি দূরের নক্ষত্রমণ্ডলে মহাকাশযান পাঠানো হলেও, এই প্রথমবারের জন্যে সূর্যে পাঠান হচ্ছে, জানিয়েছেন নাসা বিজ্ঞানী এরিক খ্রিস্টান।

তাপমাত্রার জন্যে সূর্যের কাছাকাছি না যেতে পারলেও, এই মহাকাশযানটি একটা দূরত্ব থেকেই অনুসন্ধান চালাবে সেখানকার পরিস্থিতির। মূলত তিনটি প্রশ্নের উত্তরের খোঁজ করবে নাসার এই নয়া মিশন।

এক, এই অনুসন্ধানের ফলে হয়তো নাসার বিজ্ঞানীরা জানতে পারবেন, কেন সূর্যের মাটিকে ফটোস্ফিয়ার বলা হয়। গবেষণা বলছে, সূর্যের বায়ুমণ্ডলের তুলনায় অনেক ঠাণ্ডা সেখানকার মাটি। নাসার দাবি, সূর্যের মাটির তাপমাত্রা যেখানে ৫,৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেখানে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা দুই মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রসঙ্গত, নাসার বিজ্ঞানীদের কাছে এটাই বড় প্রশ্ন, কেন মাটির তুলনায় সূর্যের ওপরের অংশের তাপমাত্রা বেশি।

এছাড়া নাসা জানতে আগ্রহী, কীভাবে গতি পায় সৌর ঝড়। এই সৌর ঝড় এক ঘণ্টায় বিভিন্ন কণাকে কয়েক লক্ষ মাইল দূরত্ব পর্যন্ত উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে।

তৃতীয় নাসার বিজ্ঞানীরা জানতে আগ্রহী মাঝে মাঝে সূর্য থেকে একধরনের অতি শক্তিশালী কণার বিচ্ছুরণ ঘটে, যেটা মহাকাশযান ও মহাকাশচারীদের জন্যে বিশেষ ক্ষতিকারক। সেটা কেন হয়?

নাসা আগামী বছর যে মহাকাশযানটি পাঠাচ্ছে সেটা ১১.৪ সেন্টিমিটার কার্বনে ঢাকা এবং প্রায় ১,৩৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রা সহ্য করতে পারবে। আর এই বিশেষভাবে ডিজাইন করা মহাকাশ যানটির মধ্যে একধরনের হিট টিউব আছে, যেটাকে বলা হচ্ছে থার্মাল রেডিয়েটর। এটা থাকার ফলে এই রোবট নিয়ন্ত্রিত মহাকাশযানের সমস্ত যন্ত্রপাতি সূর্যের অতিরিক্ত উষ্ণতা থেকে রক্ষা পাবে।