টাম্পা (আমেরিকা) সরাসরি সূর্য্যের দিকে রওনা দেওয়ার কথা ছিল নাসার মহাকাশযানের। এই প্রথম এমন উদ্যোগ নিয়েছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। কিন্তু একেবারে শেষ মূহূর্তে আগামীকাল পর্যন্ত সেই যাত্রা স্থগিত ঘোষণা করা হল। এই বিলম্বের কারণ ঠিক পরিষ্কার নয়। তবে নাসা সূত্রে খবর, উড়ানের কয়েক মূহূর্ত আগে হিলিয়াম গ্যাস সংক্রান্ত অ্যালার্ম বা বিপদ সঙ্কেত বেজে ওঠে। তারপরই সিদ্ধান্ত হয়, আপাতত উড়ান স্থগিত থাকছে।
সূর্য্যের গঠন ও তার আবহাওয়া সংক্রান্ত নানা রহস্য উদ্ঘাটনে সরাসরি তার দিকে যাত্রা করার কথা ছিল মহাকাশযানের। নাসার বিজ্ঞান সংক্রান্ত মিশনের প্রধান টমাস জুরবুচেন এই অভিযান তাঁদের এজেন্সির কৌশলগত দিক থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিশনের অন্যতম বলেছেন। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স ল্যাবের প্রজেক্ট সায়েন্টিস্ট নিকি ফক্সের মন্তব্য, সূর্য্যে গভীর রহস্যে ভরা।
ইঞ্জিনিয়াররা ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থমূল্যের পার্কার সোলার প্রোব নামে এই মিশনের ব্যাপারে চরমতম সাবধানতা অবলম্বন করছেন।
মহাকাশযান রওনা দেওয়ার পরের সম্ভাব্য সূচি ধরা হয়েছে রবিবার ভোর সাড়ে তিনটে। তখন উড়ানের পক্ষে ৬০ শতাংশ অনূকূল আবহাওয়া থাকবে বলে জানিয়েছে নাসা।
ইতিহাসে এপর্যন্ত অন্য সব মহাকাশযানের তুলনায় সূর্য্যের আরও বেশি কাছে পৌঁছে মানবহীন প্রোব মহাকাশযানের মূল কাজ হবে সূর্য্যের চারপাশের অস্বাভাবিক পরিবেশ বা করোনার না-জানা তথ্যগুলি উদ্ঘাটন করা। করোনা সূর্য্যের তলের চেয়ে প্রায় ৩০০ গুণ বেশি গরমই শুধু নয়, তা থেকে প্রচণ্ড শক্তিশালী প্লাজমা ও শক্তিশালী কণাও নিক্ষিপ্ত হয় যা জিওম্যাগনেটিক স্পেস স্টর্ম বা মহাকাশে প্রলয়ঙ্কর ঝড় তৈরি করতে পারে যা বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থা পাওয়ার গ্রিড অকেজো করে পৃথিবীর বুকে তাণ্ডব ঘটাতে পারে। এই সৌর ঝড় সম্পর্কে খুব কমই তথ্য জানা মানুষের।
প্রোব মহাকাশযানকে ঘিরে রেখেছে আল্ট্রা-শক্তিশালী তাপরোধী বর্ম যা ৪.৫ ইঞ্চি পুরু। এর ফলে সূর্য্যের পৃষ্ঠের ৩.৮৩ মিলিয়ন মাইলের (৬.১৬ মিলিয়ন কিমি) মধ্যে চলে গেলে আগুনের গোলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবে মহাকাশযান। পৃথিবীতে সূর্য্যের তাপ বিকিরণের প্রায় ৫০০ গুণ বেশি রেডিয়েশন সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে ওই বর্মের।