ওয়াশিংটন: সূর্যের বুকে একটি দৈত্যকায় কালো ছোপের খোঁজ পেল নাসার সোলার ডায়নামিক্স অবজার্ভেটরি। কালো ছোপটি আদতে ‘করোনাল হোল’ বা সৌর-গহ্বর বলে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।

সৌর-গহ্বর কী? এটি সূর্যের করোনা বা বায়ুমণ্ডলের ওপর অবস্থান করা এমন কিছু জায়গা, যেখানে সূর্যের এই অংশের বায়ুমণ্ডলের ঘনত্বও কম হয় এবং খুব কম সৌর-পদার্থ মজুত থাকে।

স্বভাবতই, ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা অন্য জায়গার তুলনায় কম হয়। ফলত, জায়গাটি অন্য অঞ্চলের তুলনায় কম উজ্জ্বল থাকায় তা কালো ছোপের মত দেখায়।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, ঘনত্ব কম হওয়ায় এই গহ্বরের মধ্য দিয়ে সোলার ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা সৌর-চুম্বকক্ষেত্র একেবারে সোজা মহাশূন্যে পৌঁছে যায়।

সেই শক্তিতে ভর করে সূর্য থেকে নির্গত সোলার উইন্ড বা সৌর-ঝড় অত্যন্ত তীব্র গতিতে এই গহ্বরের মধ্য দিয়ে মহাকাশের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

বিজ্ঞানীরা এই সৌর-ঝড়ের ওপর নজর রাখেন। কারণ মাঝেমধ্যে এই ঝড় পৃথিবীর চুম্বকক্ষেত্রর সঙ্গে ধাক্কা খায়। যা থেকে জিওম্যাগনেটিক স্টর্ম বা ভূ-চুম্বকীয় ঝড় উৎপন্ন হয়।

এর ফলে, অনেক সময়ে পৃথিবীর চারপাশে থাকা কৃত্রিম উপগ্রহগুলির ক্ষতি হয় এবং আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভাবিত হয়।

এখানে বলে রাখা প্রয়োজন এই গহ্বর খালি চোখে বা সাধারণ দূরবীনে ধরা পড়ে না। একে দেখার জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অতিবেগুনী ফিল্টার ব্যবহার করতে হয়।

সূর্যের বায়ুমণ্ডলে এই গহ্বরের সৃষ্টি হওয়ার কারণ এখনও বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করতে পারেন নি।

তবে, তাঁরা মনে করেন, সূর্যের চুম্বকীয় ক্ষেত্র ওই অঞ্চলে এত বৃদ্ধি পায় যে তা সৌর-বায়ুমণ্ডল ভেদ করে সোজা উঠতে উঠতে মহাশূন্যে চলে যায়। তখনই বায়ুমণ্ডেলের ওই অঞ্চলটি প্রভাবিত হয়।