ওয়াশিংটন: ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতকে নিয়ে একটি শক্তিশালী জোট তৈরির উদ্যোগ ও ভারতকে আমেরিকার অস্ত্র বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে চূড়ান্ত অসন্তোষ ব্যক্ত করল চিন। আমেরিকায় নিযুক্ত সে দেশের রাষ্ট্রদূতের হুঁশিয়ারি, চিনকে এখন কেউ ‘রুখতে’ পারবে না।

সম্প্রতি মার্কিন বিদেশ সচিব রেক্স টিলারসন ভারত-কেন্দ্রিক নীতি সংক্রান্ত বক্তব্য রেখেছেন এবং ট্রাম্প প্রশাসন ভারতকে অত্যাধুনিক ড্রোন সহ উচ্চ-প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সঙ্গে জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে একটি কৌশলগত চতুর্দেশীয় কৌশলগত আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। এই বিষয়গুলি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে চিনা দূত কুই টিয়ানকাই বলেছেন, অত্যাধুনিক অস্ত্রের বিক্রয় কোনও উদ্দেশ্য সাধন করবে বলে তিনি মনে করেন না।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনকে রুখতেই ভারতকে ওই অস্ত্র বিক্রয় করছে আমেরিকা। টিয়ানকাই বলেছেন, এ ভাবে কারুর পক্ষে চিনকে রোখা সম্ভব নয়।

আগামী মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিন সফরে যাচ্ছেন। সেই সফরের আগে চিনের এই কূটনীতিক সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। ট্রাম্প ১০ দিনের সফরে চিনে আসছেন। তিনি জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্সেও যাবেন।

টিয়ানকাই বলেছেন, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির লক্ষ্যে আঞ্চলিক দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতা গড়ে তুলতে আগ্রহী চিন। চিনি আরও বলেছেন, গত কয়েক বছরে ভারতের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক মসৃণ গতিতেই এগিয়ে চলেছে।

চিনা দূত প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও এশিয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় বিভিন্ন দেশের পারস্পরিক স্বার্থের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায় চিনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং বরাবরই বলে আসছেন যে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা এতটাই বড় যে সেখানে চিন ও আমেরিকার উন্নয়ণ সমানভাবেই হতে পারে। তেমনি, এশিয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও ভারত-চিন ও জাপান একযোগে এগিয়ে চলতে পারে।

চিনা দূত ডোকলাম ভারত ও চিনের সাম্প্রতিক সংঘাতের প্রসঙ্গ উল্লেখ না করেই বলেছেন, সংঘাত কোনওভাবেই দুই দেশের স্বার্থের পক্ষে অনুকূল নয়।

ভারত, জাপান, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চতুর্দেশীয় কৌশলগত আলোচনার উদ্যোগ ও ভারত সম্পর্কে একটি প্রশ্নের উত্তরে টিয়ানকাই বলেছেন, তিনি মনে করেন যে, উভয় দেশই তাদের স্বার্থ পূরণে সবচেয়ে ভালো কোনটা, তা জানে।

ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক জোরাল হওয়া নিয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠতেই পারে। এ ধরনের সম্পর্ক কোনওভাবেই অন্য কোনও দেশের স্বার্থের পরিপন্থী নয়। একই কথা খাটে ভারত-আমেরিকা ও ভারত-জাপান সম্পর্কের ক্ষেত্রেও।

সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন, এই সম্পর্কের লক্ষ্য যদি চিনকে রোখা হয় তাহলে তা ওই দেশগুলির স্বার্থের অনুকূল নয়।