নয়াাদিল্লি: করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত সমগ্র বিশ্ব। চিন থেকে শুরু হয়ে এই কোভিড-১৯ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ভারতেও আক্রান্তের সংখ্যা ছয়শ ছাড়িয়েছে। এরইমধ্যে করোনাভাইরাসজনিত বিপদ নিয়ে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মাইকেল লেভিটের পূর্বাভাস, খুব শীঘ্রই শেষ হবে করোনাভাইরাসজনিত সংকটের।
২০১৩-র রসায়নে নোবেল পুরস্কারজয়ী মার্কিন-ব্রিটিশ-ইজরায়েলি জৈবপদার্থবিদ করোনাভাইরাস অতিমারির মোকাবিলার বিষয়ে আশাবাদী। তাঁর পূর্বাভাস, এই অতিমারির দাপট প্রায় শেষের দিকে। খুব শীঘ্রই বিশ্ব করোনা-সংকটের অবসান হবে।
লেভিটের মতে, দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এই রোগ শেষ হবে, তবে ধাপে, ধাপে। তাঁর এই অনুমানের স্বপক্ষে লেভিড চিনে মৃতের সংখ্যার হার হ্রাসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন।
লেভিট বলেছেন, চিনের মতো আমেরিকাও করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সবচেয়ে খারাপ পর্ব, বহু বিশেষজ্ঞ যেমন অনুমান করছেন, তার অনেক আগেই পেরিয়ে যাবে। একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম লেভিটকে উদ্ধৃত করে একথা জানিয়েছে।
নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীর এই পূ্র্বাভাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, চিনের ক্ষেত্রে তাঁর পূর্বাভাস কার্যত মিলে গিয়েছে।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সারা বিশ্বে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা নিয়ে তিনি সমীক্ষা শুরু করেন। তাঁর মতে, সারা বিশ্ব এক্ষেত্রে ভীতি দূর করতে হবে। সেইসঙ্গে এক ব্যক্তির সঙ্গে অন্য ব্যক্তির নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ মেনে চলতে হবে। এভাবেই কোভিড-১৯ এর মোকাবিলা করা সম্ভব।
পরিসংখ্যাণ খতিয়ে দেখে লেভিড গত ফেব্রুয়ারিতে অনুমান করেছিলেন যে, চিনে আক্রান্তের সংখ্যা হবে ৮০ হাজারের মতো। মৃত্যু হবে ৩,২৫০ জনের। তাঁর এই পূর্বাভাস মিলে গিয়েছিল। চিনে ১৬ মার্চ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৮০,২৯৮। মৃত্যু হয় ৩,২৪৫ জনের। লেভিট বলেছেন, চিনে করোনার প্রকোপ তুঙ্গে ওঠার পরও ১৬ মার্চের পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা একেবারেই নগন্য।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। কয়েকমাস বা বছরের পর বছর করোনাভাইরাসের কারণে সামাজিক জীবন ব্যহত হবে বা লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হবে, এমন কোনও ইঙ্গিত তথ্য থেকে পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রত্যেকদিন ৫০ জনের বেশি সংক্রমণ ঘটছে এমন ৭৮ টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে ধাক্কা সামলে ওঠার ইঙ্গিত পেয়েছেন লেভিট। তাঁর এই সমীক্ষার মূল নজর মোট সংখ্যার ওপর নিবদ্ধ নয়। বরং দৈনন্দিন ভিত্তিতে নতুন সংক্রমণের সংখ্যা নিয়েই বিশ্লেষণ করছেন তিনি। আরও বিশেষভাবে বললে, একটি দিনের থেকে পরবর্তী দিনে সংখ্যার পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়কেই তিনি এক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সংখ্যা এখনও বেশি হলেও সংক্রমণের হারের হ্রাসের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখা গিয়েছে।
একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, দূরত্ব বজায় রাখা ও ভ্যাকসিন করোনার প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।