নয়াদিল্লি: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় কুলভূষণের সঙ্গে  তাঁর মা ও স্ত্রীকে আগামী ২৫ ডিসেম্বর জেলে গিয়ে দেখা করার অনুমতি দিল পাকিস্তান। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাক বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ড. মহম্মদ ফৈজল এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

গত ১০ নভেম্বর পাকিস্তান ‘মানবিকতার খাতিরে’ কুলভূষণকে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়। কিন্তু তাঁর মায়ের সঙ্গে দেখা করার আর্জি স্থগিত রাখা হয়।

পাক বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রকের একটি প্রেস রিলিজে জানানো হয়েছে যে, ওই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। পাক বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতের বিদেশমন্ত্রক এই প্রসঙ্গটি তোলার একমাস পর কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর মা ও স্ত্রীকে দেখা করার আর্জি মঞ্জুর করা হয়েছে।

কুলভূষণের সঙ্গে যাতে তাঁর পরিবারের লোকজন দেখা করতে পারেন সেজন্য গত জুলাই থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত এবং তাঁর মায়ের জন্য ভিসারও আবেদন জানানো হয়। কিন্তু পাকিস্তান ওই সময় ভারতের এই উদ্যোগে সাড়া দেয়নি। ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ কূলভূষণের মা যাতে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তানে যেতে পারেন সেজন্য তাঁর ভিসার আর্জি মঞ্জুর করতে পাক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শদাতা সরতাজ আজিজকে ‘ব্যক্তিগতভাবে’ চিঠিও লিখেছিলেন।

গত বছর কুলভূষণের গ্রেফতারির পর পাকিস্তান ভারতের কমপক্ষে ১৫ টি কনসুলার অ্যাকসেসের অনুরোধ ফিরিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। ভারত সাফ জানায়, পাকিস্তানের এই আচরণ ভিয়েনা কনভেনশনের পরিপন্থী।

এবার সেই অবস্থান বদল করে কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর মা ও স্ত্রীকে দেখা করার অনুমতি দিল পাকিস্তান। পরিস্থিতির চাপেই পাকিস্তানের এই অবস্থান বদল বলে মনে করা হচ্ছে। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলের থেকে চাপে রয়েছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক আদালতেও কুলভূষণ মামলার অগ্রগতি তাদের পক্ষে নেই।

উল্লেখ্য, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর চর তকমা দিয়ে পাকিস্তানের সামরিক আদালত কুলভূষণকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে। পাক সেনার দাবি, কুলভূষণ বেআইনিভাবে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছিলেন এবং ম্যজিস্ট্রেটের সামনে র-এর চর হিসেবে কাজ করার কথা স্বীকার করেছেন। যদিও ভারত সাফ জানিয়েছে, কুলভূষণকে ইরান থেকে অপহরণ করা হয়। নৌবাহিনী থেকে অবসরের পর তিনি ব্যবসায়িক কাজে ইরানে গিয়েছিলেন।

পাকিস্তানের সামরিক আদালতের মৃত্যুদণ্ডকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। গত ১৮ মে আন্তর্জাতিক আদালত নির্দেশ দেয় যে, আন্তর্জাতিক আদালতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা না হওযা পর্যন্ত পাকিস্তান কুলভূষণের দণ্ডাদেশ কার্যকর করতে পারবে না।