ইসলামাবাদ: বেনজির ভুট্টো হত্যা মামলায় পারভেজ মুশারফকে পলাতক অপরাধী ঘোষণা করল পাকিস্তানের বিশেষ সন্ত্রাস দমন আদালত। ৭৪ বছর বয়সি প্রাক্তন পাক প্রেসিডেন্ট চিকিত্সার জন্য গত বছর দেশত্যাগের অনুমতি পান। সেই থেকে তিনি দুবাইয়ে রয়েছেন।

২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর ভোটপ্রচারে রাওয়ালপিন্ডির লিয়াকত বাগের সমাবেশে ভাষণ দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় গুলি, বিস্ফোরণে মাত্র ৫৭ বছর বয়সে নিহত হন দুবারের পাক প্রধানমন্ত্রী বেনজির।

প্রায় ১০ বছর বাদে আজ বেনজির হত্যায় দুজন শীর্ষ পুলিশকর্তার ১৭ বছরের কারাবাসের নির্দেশও দিয়েছে সন্ত্রাস দমন আদালত। এঁরা হলেন রাওয়ালপিন্ডির প্রাক্তন সিপিও সৌদ আজিজ ও রাওয়াল টাউনের প্রাক্তন এসপি খুররম শাহজাদ। এদিন সন্ত্রাস দমন আদালতের বিচারক আসগর খানের রায় ঘোষণার সময় কোর্টরুমে হাজির ছিলেন জামিনে মু্ক্ত ওই দুজন। ৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানাও হয়েছে তাঁদের।

এদিন প্রাক্তন পাক সামরিক শাসকের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে প্রমাণাভাবে আরও ৫ অভিযুক্ত রেহাই পেয়েছে মামলা থেকে। সকলেই তেহরিক-ই-তালিবান সদস্য। এরা বরাবর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) নেত্রীর হত্যায় জড়িত নয় বলে দাবি করেছে।

বেনজির নিহত হওয়ার পরপরই মামলা হয়। তারপর নানা উত্থান পতন হয়েছে তাতে। আট বিচারক এই দীর্ঘ সময়ে মামলার শুনানি করেছেন, তাঁদের ভিন্ন করানো বদল করা হয়েছে। গতকালই শেষ হয়েছে বিচার প্রক্রিয়া।

২০০৮-এর জানুয়ারি ৫ সন্দেহভাজনের বিচার শুরু হয়, তবে মুশারফকে অভিযুক্ত করা হয় ২০০৯-এ, ফেডেরাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির নতুন তদন্তের পর।

এদিনের আদালতের নির্দেশের পর বেনজির কন্যা আসিফা ভুট্টো জারদারির ট্যুইট, ১০ বছর বাদ আজও ন্যয়বিচারের অপেক্ষায়। প্ররোচনাদাতাদের সাজা হল, কিন্তু মায়ের হত্যার আসল দোষীরা আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রেসিডেন্ট মুশারফ অপরাধের সাজা না পাওয়া পর্যন্ত ন্যয়বিচার অধরাই থাকবে। পিপিপি নেত্রী শেইলা রাজাও রায়ে হতাশ। তিনি বলেছেন, তদন্তে ও সরকারের দায়ের করা এফআইআরে আপত্তি ছিল আমাদের।







শুরুতে টিটিপি প্রধান বাইতুল্লা মেহসুদকে বেনজির হত্যার জন্য দায়ী করা হয়। মুশারফ সরকার প্রমাণ হিসাবে মেহসুদের সঙ্গে এক অপারেটরের টেপবন্দি কথোপকথন প্রকাশ করে। তাতে শোনা যায়, হত্যার জন্য তাকে বাহবা দিচ্ছে মেহসুদ।

কিন্তু এফআইএ-র প্রধান কৌঁসুলি মহম্মদ আজহার চৌধুরি ওই টেলিফানে হওয়া কথাবার্তা গ্রহণযোগ্য প্রমাণ হিসাবে মানতে অস্বীকার করেন। মুশারফই তদন্তে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে নিজেকে বাঁচানোর জন্য এই 'সাজানো গল্প' ছেড়েছেন বলে জানান তিনি।