ইসলামাবাদ: রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যক্তি, সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে কতটা, কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে গত মাসে পাকিস্তান সফরে এসেছিল তাদের নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের টিম। চাপে পড়ে এবার মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সঈদকে জঙ্গি ঘোষণার পর তার ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হল পাকিস্তানে। পঞ্জাব সরকারের নির্দেশে রাওয়ালপিন্ডি জেলা প্রশাসন সঈদের জামাত-উদ-দাওয়া ও ফালাহ-ই-ইনসানিয়াত ফাউন্ডেশনের চালানো একটি ধর্মীয় স্কুল, চারটি ডিসপেনসারির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়েছে। স্কুলটি তুলে দেওয়া হয়েছে আওকাফ বিভাগকে, যারা ধর্মীয় সম্পত্তির দেখভাল করে। ডেপুটি কমিশনার তালাত মেহমুদ গন্ডাল এ খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তবে দেশজুড়ে জামাতের সব দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেওয়া পাকিস্তান সরকারের পক্ষে কঠিন হবে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।
ডন-এর খবর, প্রাদেশিক সরকার রাওয়ালপিন্ডির চারটি ধর্মীয় স্কুলের তালিকা দেয় জেলা প্রশাসনকে। প্রশাসনের লোকজন ওই স্কুলগুলিতে যান। যদিও জামাতের দাবি, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক নেই স্কুলগুলির।
এক সরকারি কর্তা জানান, জামাত পরিচালিত সব ধর্মীয় স্কুলের পড়ুয়া, শিক্ষকদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য খতিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ফালাহ ইনসানিয়াতের ডিসপেনসারিগুলির ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীদের যাবতীয় তথ্যও পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সরকার ওইসব তথ্য খুঁটিয়ে দেখতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও আওকাফ বিভাগের সঙ্গে যৌথ টিম গড়েছে। অ্যাটক, চাকওয়াল, ঝিলাম জেলাতেও একই ধরনের অভিযান চলবে বলে জানান ওই অফিসার।
পাকিস্তান রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ করা একাধিক সংস্থার বিরুদ্ধে সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে।
তবে সঈদের স্কুল, ডিসপেনসারিগুলি কব্জা করে ফেলা শুরু হল ১৮ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি প্যারিসে হতে চলা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের জরুরি বৈঠকের মুখে।
ভারত, আমেরিকা উভয়েই পাকিস্তানকে ওই ফোর্সের আন্তর্জাতিক অবৈধ আর্থিক লেনদেন ও সন্ত্রাসে মদত দেওয়া দেশের তালিকায় ফেলতে জোরদার প্রয়াস চালাচ্ছে। ২০১২-য় পাকিস্তানকে শেষ ওই তালিকায় উঠেছিল, ৩ বছর রাখা হয়েছিল তাদের।
ফেডেরাল ক্যাবিনেট গতকালই নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে অর্থ সহায়তা বন্ধ করতে নতুন নিয়ম অনুমোদন করেছে।
গত সপ্তাহেই প্রেসিডেন্টের অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে পাকিস্তান সন্ত্রাস দমন আইন বদল করে যাতে সঈদের জামাত, ফালাহ ও অন্য কয়েকটি সন্ত্রাসবাদ গোষ্ঠীকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ তালিকায় ঢোকানো যায়।