ইসলামাবাদ: জাল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও অর্থ পাচার মামলায় গ্রেফতার হলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি। সোমবার পাকিস্তান পিপলস পার্টির যুগ্ম চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারির বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করে পাক পুলিশ। এদিন ইসলামাবাদের হাইকোর্ট জারদারির জামিনের আবেদন খারিজ করতেই পিপিপি-নেতার বাড়িতে হানা দেয় ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো। সঙ্গে ছিল পুলিশও।


প্রথমে পুলিশকে জারদারির বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরে তদন্তকারী সংস্থা ও পুলিশ প্রাক্তন পাক রাষ্ট্রপতির বাড়িতে ঢোকে এবং জারদারির সঙ্গে গ্রেফতারি নিয়ে কথা বলে। পিটিআই প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, প্রথমে রাজি না হলেও দীর্ঘ কথাবার্তার পর জারদারি আত্মসমর্পণ করেন। গ্রেফতারের পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর ইসলামাবাদের দফতরে। আদালতে হাজির করার আগে ১১তম পাক রাষ্ট্রপতিকে সেখানেই রাখা হবে।


যদিও পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা তথা প্রাক্তন পাক রাষ্ট্রপতি তাঁর বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। জাল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে শাসক দলের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগও করেছেন জারদারি। তাঁর অভিযোগ, শাসক দল বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে, সেই কারণেই বিরোধী নেতাদের বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছে।


উল্লেখ্য, পাক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করলেও এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত জারদারির বোন ফরিয়াল তালপুরকে গ্রেফতার করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি বৈঠক ডেকেছে পিপিপি। দলের চেয়ারম্যান বিলাওল ভুট্টো-জারদারির মুখপাত্র মুস্তফা নওয়াজ জানিয়েছেন, তাঁরা লিখিত নির্দেশিকার অপেক্ষা করছেন। সেটা হাতে পাওয়ার পরই পদক্ষেপ নেবেন। দলের পক্ষ থেকে সমর্থকদের শান্তি বজায় রাখার জন্যও আবেদন করেছেন তিনি। এদিকে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি পাক সংসদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, জারদারিকে যেন সংসদের সামনে হাজির করা হয়। তিনি বলেন, “যেহেতু জারদারি একজন সাংসদ, তাঁকে সংসদে হাজির করার নির্দেশ দিতে স্পিকারকে অনুরোধ করছি।”


বিগত নির্বাচনে সিন্ধ প্রদেশের নওয়াবশাহ আসন থেকে জয়ী আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে ১৫০ মিলিয়ন অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোও। তবে ২০০৭ সালে সন্ত্রাস হামলায় তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁকে তদন্ত থেকে বাদ দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা প্রায় ১১ হাজার ৫০০ জাল অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে। সেই মতো ৯২৪ অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের ওপর নজরদারিও চালাচ্ছে তাঁরা।