নয়াদিল্লি: পাকিস্তান বিপাকে পড়তে চলেছে। গোটা দুনিয়ায় বেআইনি অর্থ লেনদেনের ওপর নজরদারি চালানো সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) ফের পাকিস্তানকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ও লোকজনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগে তাদের নজরদারি তালিকায় (ধূসর তালিকা বা গ্রে লিস্ট) ঢোকাল। সরকারি ভাবে এখনও এই ঘোষণা হয়নি বটে, তবে সূত্রের খবর, ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট এই প্রতিষ্ঠানে পাকিস্তানকে ওই তালিকায় ফের তোলার ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে, এমনকী যে চিন পাকিস্তানের শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব মরসুমেরই বন্ধু বলে পরিচিত, আমেরিকা ও অন্যদের চাপেও সে-ও বিরোধিতা, আপত্তি তুলে নিয়েছে। ৪৬-১ ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। একমাত্র তুরস্কই পাকিস্তানকে সমর্থন করে।
এ সপ্তাহের শুরুতেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করেন, পাকিস্তানকে এফএটিএফের নজরদারি তালিকায় তোলার ব্যাপারে সদস্য দেশগুলি একমত হতে পারেনি, তাঁদের জয় হয়েছে। যদিও ভারত পাল্টা জানায়, এখনই এমন কথা বলার সময় আসেনি।
সন্ত্রাসে আর্থিক মদত বন্ধে, বেআইনি অর্থ লেনদেন রোধেও তেমন জোরদার পদক্ষেপ না করার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানের নাম নজরদারি তালিকায় তোলার প্রস্তাবটি পেশ করেছিল আমেরিকা। পাকিস্তানকে আফগানিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করতে চাপে ফেলার বৃহত্তর মার্কিন কৌশলেরই অঙ্গ তাদের এই তালিকায় ফেলার প্রস্তাব।
পাকিস্তান এতে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এফএটিএফের নজরদারি তালিকায় থাকার অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি এক তো পাকিস্তানি ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে দ্বিধায় ভুগবে, তার ওপর তারা পাকিস্তানের ক্ষেত্রে বাড়তি নজর রাখবে। বিদেশে পাকিস্তানি ব্যবসায়িক সংস্থাগুলির পক্ষে অর্থ সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে উঠবে। এর প্রভাব পড়বে পাক অর্থনীতিতে। ঋণের দায় মেটাতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে পারে পাকিস্তান। প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার ঋণ জুনের শেষে মেটাতে হবে তাদের, নয়তো এস অ্যান্ড পি, মুডিজ ও ফিচের মতো আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলির বিচারে তাদের রেটিং কমিয়ে দেবে।
২০১২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত পাকিস্তান এই তালিকায় ছিল।
১৯৮৯ সালে তৈরি এফএটিএফের উদ্দেশ্য হল বেআইনি অর্থ লেনদেন, সন্ত্রাসে মদত দেওয়া ও আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার ভিত্তির সামনে অন্যান্য বিপদ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় আইনি, নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপের মাপকাঠি স্থির করা ও সেগুলি রূপায়ণে জোর দেওয়া।