ইসলামাবাদ: ১৯৯৮ সালে প্রথম পরীক্ষামূলক পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটানোর পর থেকে তাদের সামরিক ভান্ডারে ইতিমধ্যেই ১২০টির বেশি পরমাণু অস্ত্র চলে এসেছে বলে খবর। এটা সত্যি হলে পরমাণু অস্ত্র সংখ্যার বিচারে ভারত, ইজরায়েল, উত্তর কোরিয়াকে ছাড়িয়ে গিয়েছে তারা। এই পরিসংখ্যান ধরে বলা হয়, পরমাণু অস্ত্র মজুত করায় বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত এগচ্ছে পাকিস্তান। এই প্রেক্ষাপটে ইসলামাবাদ থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে কাহুটায় পাকিস্তান একেবারে নতুন একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কমপ্লেক্স তৈরি করতে চলেছে বলে বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট মারফত পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে জানালেন পশ্চিমী প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। প্রথমে ২০১৫-র ২৮ সেপ্টেম্বর, তারপর ফের এ বছরের ১৮ এপ্রিল এয়ারবাস ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেস থেকে তোলা স্যাটেলাইট চিত্র ব্যবহার করে আইএইচএস জেনস ইন্টেলিজেন্স রিভিউ ওই বিশ্লেষণ করেছে।
বিশ্লেষকদের বক্তব্য, পাকিস্তান পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠী (এনএসজি)-তে ঢুকতে মরিয়া। ৪৮ সদস্যবিশিষ্ট গোষ্ঠীটির উদ্দেশ্যই হল পরমাণু অস্ত্র তৈরির উপাদান, প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ রপ্তানিতে রাশ টেনে বিধ্বংসী অস্ত্রশস্ত্রের প্রসার ঠেকানো। কিন্তু পাকিস্তানের নতুন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ঘাঁটি তৈরির পদক্ষেপ থেকে তাদের পরমাণু ভান্ডার বাড়ানোর ভাবনাই ফুটে উঠেছে, যা এনএসজি-র লক্ষ্যের পরিপন্থী। অর্থাত্ এনএসজি-র উল্টো পথেই হাঁটছে তারা।
কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস ও স্টিমসন সেন্টারের গবেষকদের তৈরি ২০১৫ সালের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, অস্ত্র ভান্ডারে বছরে ২০টি করে হাতিয়ার বাড়াতে পারে পাকিস্তান এবং এক দশকে বিশ্বের তৃতীয় সর্ববৃহত্ অস্ত্রভান্ডারও তাদেরই হাতে থাকবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রায় ১.২ হেক্টর জমির ওপর নতুন কেন্দ্রটি তৈরি হচ্ছে। সুরক্ষিত খান রিসার্চ ল্যাবরেটরি চত্বরের ভিতরেই হবে সেটি।
আইএইচএস জেন-এর পরমাণু প্রসার সংক্রান্ত বিশেষক কার্ল ডিউয়ি বলেছেন, কেন্দ্রটিতে থাকছে কঠোর নিরাপত্তার আয়োজন। একটি নতুন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের যে যে কাঠামোগত বৈশিষ্ঠ্য থাকে, এখানেও তা রয়েছে। পরমাণু জ্বালানি সরবরাহকারী কোম্পানি ইউরেনকোর তৈরি বিভিন্ন ঘাঁটির সঙ্গে এর গভীর সাদৃশ্য রয়েছে। প্রসঙ্গত, ইউরোপে একাধিক পরমাণু ঘাঁটি দেখভাল করে সংস্থাটি। আরেক বিশেষজ্ঞ শার্লি কার্টরাইট বলেছেন, এটা কাকতালীয় নয় মোটেই। কেননা পরমাণু গবেষণা সংক্রান্ত ডিজাইন বা নকশা চুরি করে পাকিস্তানে ফিরে আসার আগে পাক পরমাণু কর্মসূচির মস্তিষ্ক আবদুল কাদির খান ইউরেনকোতেই কাজ করতেন।
যদিও পাকিস্তানি পদার্থবিজ্ঞানী এ এইচ নায়ার বলেছেন, কেন্দ্রটি যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কেন্দ্রই হয়ে থাকে, তবে তার প্রাথমিক কারণ হল, সেটি তৈরি হচ্ছে খান রিসার্চ গবেষণাগারের ভিতরে। দেশের পরমাণু ঘাঁটিগুলিতে চিন থেকে আমদানি করে আনা ইউরেনিয়াম সরবরাহ করা হয় বলেও জানান তিনি।
কাহুটায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কেন্দ্র তৈরি করতে চলেছে পাকিস্তান, দাবি
web desk, ABP Ananda
Updated at:
16 Sep 2016 08:02 PM (IST)
NEXT
PREV
আন্তর্জাতিক (world) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -