বিসকেক: এসসিও সামিটের ফাঁকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ‘দারুণ সফল বৈঠক’ হয়েছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিরখিজস্তানের রাজধানী বিসকেকে চলছে সামিট। দুই রাষ্ট্রনেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন, আর্থিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও উন্নত করার শপথও নিয়েছেন বলে ট্যুইট করেছেন মোদি।
গত মাসে বিজেপির লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের সুবাদে ফের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম মোদি বসলেন শি-র সঙ্গে। তাছাড়া রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ আল কায়েদা নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত কমিটি পাকিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে থাকা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের মাথা মাসুদ আজহারকে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী ঘোষণার এক মাস বাদে কথা বললেন দুজনে। চিন মাসুদকে কালো তালিকায় ফেলার প্রস্তাব দীর্ঘদিন ঠেকিয়ে রাখার পর শেষ পর্যন্ত তুলে নেয়। তারপরই তাকে ওই তকমা দিয়েছে কমিটি।
শি-র কাছে পাকিস্তান থেকে উদ্ভূত সীমান্ত সন্ত্রাসবাদেরও উল্লেখ করেন মোদি। এ প্রসঙ্গে বিদেশসচিব বিজয় গোখেল বলেন, দুই নেতার মধ্যে পাকিস্তান নিয়ে সামান্যই কথা হয়েছে। ভারতের পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চাই, এটাই বরাবরের স্পষ্ট অবস্থান। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শি-এর সঙ্গে বসার প্রাক্কালে মোদি চিনা প্রেসিডেন্টকে এও জানান, তিনি ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করার চেষ্টা করলেও তাকে ‘বেপথু’ করা হয়েছে। মোদিকে উদ্ধৃত করে গোখেল বলেন, পাকিস্তানকে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কিন্তু এখনকার মতো আমরা তা হতে দেখছি না। আশা করছি, আলোচনা ফের শুরুর ব্যাপারে শক্ত ব্যবস্থা নেবে ইসলামাবাদ।
বৈঠকের শুরুতে মোদিকে নির্বাচনী সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান শি। মোদি জবাবে তাঁকে বলেন, ভারতে ভোটের ফল বেরনোর পর আপনার বার্তা পেয়েছিলাম। আজও আপনি আমায় জয়ের জন্য অভিনন্দন জানালেন। আপনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞ আমি।
গত মাসে লোকসভা নির্বাচনে অভূতপূর্ব জয়ের জন্য মোদিকে ‘হৃদয় থেকে অভিনন্দন’ জানিয়েছিলেন শি। সরকারি ভাবে ভোটের ফল ঘোষণার আগেই বিদেশি রাষ্ট্রনেতার কাছ থেকে এমন অভ্যর্থনাপ্রাপ্তির ঘটনা বিরল। ১৫ জুন ৬৬ হচ্ছে চিনা প্রেসিডেন্টের। মোদিও শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁকে বলেন, ভারতের সব মানুষের তরফে আপনাকে দারুণ শুভ জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইল। আপনার কথামতোই আগামী দিনে নানা বিষয়ে আমরা উভয়েই এগতে পারি। আরও কাজ করার প্রয়োজনীয় মেয়াদ আমাদের দুজনেরই আছে। উহানের বৈঠকের পর আমাদের সম্পর্কে নতুন গতি, স্থিতিশীলতা দেখছি। দুপক্ষের কৌশলগত যোগাযোগের ক্ষেত্রেও দ্রুত উন্নতি হয়েছে, যার ফলে পরস্পরের উদ্বেগ, স্বার্থের প্রতি আরও যত্নবান হয়েছি আমরা। তারপর থেকে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্রও বেরিয়ে এসেছে।
গত ৫ বছরে এই নিয়ে প্রায় ১০ বার নানা সময়ে সাক্ষাত্ হল মোদি, শি-র। উহান বৈঠকের পর উভয় দেশই সামরিক স্তরে সম্পর্ক সমেত নানা স্তরে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা জোরদার করে।
আজকের আলোচনা প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভিশ কুমার দুই নেতাই উষ্ণতা দেখিয়ে কথা বলেছেন বলে জানান। বলেন, দুই নেতা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সমৃদ্ধ করার সব দিক নিয়ে কথা বলেছেন, আমাদের বন্ধুত্ব গভীর করায় কৌশলগত যোগাযোগের ইতিবাচক ভূমিকাও মেনে নিয়েছেন।