করাচি: ভরদুপুরে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তানের করাচি (Karachi Blast)। তাতে চার জন প্রাণ হারিয়েছেন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন তিন চিনা নাগরিকও (Chinese nationals Killed)। আহত হয়েছেন দু’জন। গাড়িতে চেপে করাচি ইউনিভার্সিটির কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটে যাচ্ছিলেন তাঁরা। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর হুয়াং গুইপিংও। পাকিস্তানে নিষিদ্ধ উগ্রপন্থী সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মি (Baloch Liberation Army/BLA) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। পাকিস্তানের দখল বালুচিস্তানকে মুক্ত করে, স্বাধীনতার দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে আসছে ওই সংগঠন।
ভরদুপুরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ করাচিতে
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ করাচি ইউনিভার্সিটির ঠিক বাইরে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। কনফুসিয়াস ইউনিভার্সিটির ডিরেক্টর ছাড়াও নিহতদের মধ্যে থেকে দিং মুপেং, চেন সাই নামের আরও দুই চিনা নাগরিককে শনাক্ত করা গিয়েছে। গাড়ির চালক খালিদেরও বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিন্ধ প্রদেশের আইজি মুশতাক আহমেদ মাহার। এ ছাড়াও ওয়াং ইউকিং নামের অন্য এক চিনা নাগরিক এবং হামিদ নামের এক পাকিস্তানি নাগরিক আহত হয়েছেন বিস্ফোরণে।
আরও পড়ুন: Twitter Elon Musk deal: মালিক পদে মাস্ক ! চাকরি যাচ্ছে ট্যুইটারের সিইও পরাগ আগরওয়ালের ?
সিসিটিভি ফুটেজে বিস্ফোরণের দৃশ্য
যেখানে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়েছে, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছে করাচি পুলিশ। তাতে দেখা দেখা গিয়েছে, ভরদপুরে রাস্তায় জনসমাগম তেমন নেই। রাস্তার পাশে একটি গাছের নীচে উশখুশ করছেন বোরখা পরিহিত এক মহিলা। দূর থেকে সাদা রংয়ের ভ্যানটিকে এগিয়ে আসতে থেকে বোরখার সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। গাড়িটি তাঁর কাছে আসা মাত্র ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারিদিক। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়ির জানলার কাচ পর্যন্ত গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গিয়েছে। ধোঁয়া কাটলে দেখা যায়,দাউ দাউ করে জ্বলছে গাড়িটি।
গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের ‘বন্ধুতা’ ক্রমশ নিবিড় হয়েছে। চিমনা নাগরিকদের নিশানা করেই এ দিন বিস্ফোরণটি ঘটানো হয় বলে প্রাথমিক তদন্তের পর ধারণা করাচি পুলিশের। পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন বিভাগের আধিকারিক রজা উমর খত্তাব জানিয়েছেন, এক মহিলাই আত্মঘাতী বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছেন। বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে বল বিয়ারিং। পাক রেঞ্জাররা ওই গাড়িটিকে নিরাপত্তা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তার পরেও এমন ঘটনা ঘটল কী ভাবে, তার সদুত্তর মেলেনি। তবে গোটা ঘটনায় নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। তবে পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, হাজার হাজার পড়ুয়া সারাক্ষণ ঢোকেন বেরোন। তাঁদের প্রত্যেকের তল্লাশি নেওয়া সম্ভব নয়।
এ দিন বিস্ফোরণের পরই সিন্ধ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মুরাদ আলি শাহ চিনা কনস্যুলেটে ছুটে যান। কনসাল জেনারেল লি বিজিয়ানকে গোটা পরিস্থিতির বিবরণ দেন। নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও। সিন্ধপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন তিনি। সন্ত্রাস দমনে সবরকম সহায়তার আশ্বাস দেন।