লহৌর: দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের জেল হয়েছে। নির্বাচন থেকে তাঁকে নিষিদ্ধ করেছে দেশের আদালত। তাই জামিনের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও, চিকিৎসা করাতে লন্ডন গিয়ে আর ফেরেননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ (Nawaz Sharif)। তাঁর অনুপস্থিতিতে পাকিস্তানের (Pakistan Politics) রাজনীতির একেবারে সামনের সারিতে এসে পড়েছেন কন্যা মরিয়ম নওয়াজ (Maryam Nawaz)। বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবে (No Trust Vote) যখন গদি যায় যায় অবস্থা ইমরান খানের (Imran Khan), সেই সময় সামনে থেকে বিরোধীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মরিয়ম। শুধু তাই  নয়, ইমরানকে গদিচ্যূত করে নতুন করে নির্বাচনের দাবি তুলছেন তিনি।


ইমরান খান সরকারে বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনে নেতৃত্ব মরিয়মের


চার বছরের ইমরান সরকারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে গণ আন্দোলন শুরু হয়েছে, যার অভিধানিক নাম রাখা হয়েছে পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (PDM)। এই আন্দোলনে সামিল রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজ (PML-N), জামিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম ফজল (JUI-I) এবং অন্য বেশ কিছু বিরোধী দল। সোমবার রাতে ইসলামাবাদের শ্রীনগর হাইওয়ে-তে বিরাট মিছিলের আয়োজন করেছিল তারা। সেই মিছিলেই নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় মরিয়মকে।


বাবার অনুপস্থিতিতে বর্তমানে PML-N-এর সহ সভাপতি পদে রয়েছেন মরিয়ম। মিছিলে যোগ দিতে দু’দিন আগেই ইসলামাবাদ পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন পঞ্জাব প্রদেশ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হমজা শেহবাজ। ২৬ মার্চ লহৌরের পর সোমবার ইসলামাবাদে মিছিলটিকে নেতৃত্ব দেন তাঁরা। সেখানে শিবির গড়ে অবস্থান বিক্ষোভও করেন।


পাকিস্তানের ইতিহাসে সব চেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি প্রধানমন্ত্রী শরিফ। মিছিলে একেবারে অগ্রভাগে ছিলেন তাঁর মেয়ে মরিয়ম। রাজনীতিতে টিকে থাকতে ইমরান ধর্মকে তুরুপের তাস করছেন বলে অভিযোগ কেরন তিনি। ইমরানের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি, আস্থাভোটের দিন ১৭২ সাংসদের সমর্থন পেয়ে দেখান।’’ নিজের কুর্সি বাঁচাতে ইমরান পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী উসমান বাজদারকে বলির পাঁঠা করছেন বলেও অভিযোগ করেন মরিয়ম। তাঁর দাবি, উসমানকে সরিয়ে চৌধরি পারভেজ ইলাহিকে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইমরান, যাতে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়লে মুসলিম লিগ-কোয়েদ পার্টির সমর্থন পান।


টালমাটাল ইমরান খানের গদি


ইমরানের মতো অকৃতজ্ঞ মানুষ জীবনে দেখেননি বলেও মন্তব্য করেন মরিয়ম। তাঁর অভিযোগ, নিজে ক্ষমতায় থাকতে বিশ্বস্ব সঙ্গীকে জলে ঠেলে দিয়েছেন ইমরান। মানুষ ওঁর উপর আস্থা হারিয়েছেন। যে কারণে উপনির্বাচনে ১৬টির মধ্যে ১৫টিতেই হেরেছে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। তাই হার নিশ্চিত জেনে এখন বিদেশি ইন্ধনের অজুহাত দিতে হচ্ছে।


আরও পড়ুন: https://bengali.abplive.com/news/putin-on-ukrainian-president-tell-zelenskyy-i-will-thrash-them-877352/amp


২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বচিত হন ইমরান। এই মুহূর্তে জোট সরকার চালাচ্ছেন তিনি। ৩৪২ আসনের পাকিস্তান সংসদের ম্যাজিক সংখ্যা ১৭২ হলেও, ইমরানের দলের ১৫৫ জন সাংসদ রয়েছেন। কিন্তু শরিক দলের অনেকেই ইমরানের উপর খাপ্পা। যদিও ইমরানের দাবি, অনাস্থা প্রস্তাব এনে তাঁর কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারবেন না কেউ।