করাচি: তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। প্রতিবেশী সব দেশই কমবেশি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই তালিকায় ছিল পাকিস্তানও। কিন্তু সাহায্যের হাত বাড়িয়েও এবার বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে পাকিস্তানকে। উল্লেখ্য, গত বছর পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। সেই সময় বিভিন্ন দেশের তরফে পাকিস্তানের দিকে সাহায্য, ত্রাণ পাঠানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, তুরস্কের তরফে যে ত্রাণ পাঠানো হয়েছিল, সেই বন্যাত্রাণই এবার পাল্টা তুরস্কে পাঠানো হয়েছে। এই খবরটি প্রকাশ্যে এনেছে অন্য কোনও দেশের নয়, পাকিস্তানেরই সংবাদমাধ্যম।


 






কিছুদিন আগেই তুরস্কে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়। উল্লেখ্য়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক এবং সিরিয়ায় হওয়া সেই ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভূমিকম্পের পর চলমান ত্রাণ কাজ এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের তুরস্ক সফর বাতিলের জন্য দায়ি বলে মনে করা হচ্ছে। পাক প্রধানমন্ত্রী তার বন্ধু  দেশ তুরস্কের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের কঠিন সময়ে সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মন্ত্রীসভার তরফে একমাসের বেতন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এভাবে বিপদের সময় যে ত্রাণ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা থেকে পাঠানো হয়েছিল, সেই ত্রাণই পাঠানো নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। জানা গিয়েছে তুরস্ক সফরে যাওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদাওয়ারির। কিন্তু সবকিছুই বাতিল হয়েছে। এদিকে এই ঘটনায় পাক সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে সেদেশের জনগনও। 


তুরস্কে সেই ভূমিকম্পের পর থেকে প্রায় ৩০০ আফটারশক অনুভূত হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত মিলিয়ে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি হেমিমহান  কেঁপে ওঠে। রিখটার স্কেলে সে বার তীব্রতা ছিল ৪.৫। তার একদিন পর, দু’-দু‘বার কেঁপে ওঠে পুতুর্জে। সেখানে আফটরশকের তীব্রতা ছিল ৪.২।  ১৫ ফেব্রুয়ারি ৪.৬ তীব্রতায় কেঁপে ওঠে দারেন্দে। কম্পনের উৎসস্থল ছিল ১২.৪ কিলোমিটার গভীরে। তাই উদ্বেগ বাড়ছে।


মনিতে ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবেই পরিচিত তুরস্ক। ২০২০ সালেই সে দেশে সবমিলিয়ে ৩৩ হাজার বার কম্পন অনুভূত হয়। এর মধ্যে ৩৩২ বার কম্পনের তীব্রতা ছিল ৪.০-র উপরে। ভৌগলিক অবস্থান, টেকটোনিক পাতের গঠনের জন্যই তুরস্ক ভূমিকম্পপ্রবণ দেশের মধ্যে পড়ে। পৃথিবীর বহির্ভাগ মূলত ১৫টি স্তর নিয়ে গঠিত, যাকে টেকটোনিক পাতও বলা হয়। এই পাতগুলির মধ্যেকার সীমানাই গন্ডগোলের মূলে। সেখানে ফাটল থাকে। এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে একটি পাতের উপর অন্যটি থাকে। একটু এদিক ওদিক হলেই নেমে আসতে পারে বিপর্যয়।