নয়াদিল্লি: শেষ পর্যন্ত ১৯-তম সার্ক সম্মেলন পাকিস্তানে না হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। উরির সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রতিবাদে ইসলামাবাদে হতে চলা এই সম্মেলন ভারতের বয়কটের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পাশাপাশি আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও ভুটানও বেঁকে বসায় প্রবল চাপে পড়েছে পাকিস্তান। আট সদস্য দেশের মধ্যে চারটিই উপমহাদেশে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের দিকে আঙুল তুলে ইসলামাবাদে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে রাজি না হওয়ায় গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই কাঠমান্ডুর খবর, ভারত গতকাল সরে যাওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতিতে নভেম্বরে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্মেলন বাতিল হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে নেপালের সংবাদমাধ্যম।


‘দি কাঠমান্ডু পোস্ট’ জানাচ্ছে, চলতি পরিস্থিতিতে গতকাল ভারত সামিল হতে অপারগতার কথা জানিয়ে দেওয়ার পর ১৯-তম সার্ক বৈঠক স্থগিত হয়ে গিয়েছে। ঘটনাচক্রে সার্কের চেয়ার পদে রয়েছে নেপালই। সুতরাং সে দেশের সংবাদমাধ্যমের দাবিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। নেপালকে ইতিমধ্যেই ইসলামাবাদে সম্মেলন হলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে ভারত। তাছাড়া সার্কের সনদেই বলা রয়েছে, যে কোনও সদস্য দেশ সরে দাঁড়ালে সার্ক সম্মেলন বাতিল বা স্থগিত হয়ে যাবে। সেই হিসাবে এক প্রকার এবারের সম্মেলন বাতিল হয়েই গিয়েছে বলা চলে। আর একা ভারত নয়, পরোক্ষে পাকিস্তানকে দুষেছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটানের মতো সদস্য দেশগুলিও। তিনটি দেশেরই বক্তব্য, একটিই  দেশ এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে যা সফলভাবে এই সম্মেলন হওয়ার অনুকূল নয়। তারাও ইসলামাবাদের  বৈঠক বয়কটের পথে হেঁটেছে।

কাবুলে একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, আফগানিস্তানে বাইরে থেকে চাপিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসবাদের ফলশ্রুতিতে হিংসার মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। তাই আফগান প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আশরফ গনি  কমান্ডার ইন চিফ হিসাবে পুরোপুরি ব্যস্ত থাকবেন বলে সম্মেলনে থাকতে পারছেন না। এটা নেপালকে আফগান সরকার জানিয়েও দিয়েছে।

একই সুরে বাংলাদেশও নেপালকে জানিয়েছে, বাংলাদেশের ঘরোয়া বিষয়ে ক্রমাগত একটি দেশের হস্তক্ষেপের ফলে এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যেটা ইসলামাবাদে ১৯-তম  সার্ক বৈঠক সফল ভাবে হওয়ার সহায়ক নয়।

ভুটানও সার্ক প্রক্রিয়ার প্রতি দায়বদ্ধতা জানিয়ে নেপালকে বার্তা পাঠিয়ে বলেছে, উপমহাদেশে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদের রমরমায় ভুটান সরকার যারপরনাই উদ্বিগ্ন। সন্ত্রাসবাদের দাপটে ইসলামাবাদে সার্ক বৈঠক সফলভাবে হওয়ার পরিবেশ নেই।

আরেক সদস্য দেশ শ্রীলঙ্কাও নাকি জানিয়ে দিয়েছে, ভারতকে বাদ দিয়ে কিছুতেই সার্ক সম্মেলন হতে পারে না।