লাহোর: তথ্যপ্রমাণের অভাবের কথা উল্লেখ করে সর্বজিৎ সিংকে লাহোরের কোট লাখপত জেলে খুনের মামলায় দুজন প্রধান সন্দেহভাজনকে রেহাই দিল পাকিস্তানের আদালত। ৫ বছরের বেশি সময়ের বকেয়া মামলায় শনিবার লাহোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মহম্মদ মঈন খোকার সব সাক্ষী বিরূপ হয়ে পড়ায় নির্দোষ বলে অব্যাহতি দেন আমির তাম্বা ও মুদাস্সর নামে দুজনকে।
জনৈক সরকারি অফিসার বলেন, একজন সাক্ষীও আদালতে দুই সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে কিছু বলেননি। তাই আদালত প্রমাণাভাবে তাদের রেহাই দেয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে দুই অভিযুক্তই কোট লাখপত জেল থেকে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে আদালতে হাজিরা দেয়।
২০১৩-য় কোট লাখপত জেলে সর্বজিতের ওপর হামলা করে তারা, মারা যান তিনি।
এর আগের শুনানিগুলিতে নিজেদের পক্ষের সাক্ষীদের বক্তব্য রেকর্ড করাতে হাজির করাতে না পারায় সরকার পক্ষের তুমুল নিন্দা করেছিলেন বিচারক। আগের এক শুনানিতে এক সাক্ষী জানিয়েছিলেন যে, সর্বজিৎকে সঙ্কটজনক অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল হাসপাতালে। সেই সাক্ষীকে উদ্ধৃত করে সরকারি অফিসারটি বলেন, আমি সর্বজিতের বিবৃতি রেকর্ড করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ডাক্তাররা তাঁর অবস্থা খুবই গুরুতর বলে জানিয়ে তাঁকে বিরত রাখেন। বিবৃতি রেকর্ড করার আগেই মৃত্যু হয় সর্বজিতের।
দায়রা আদালতে বিচার শুরু হওয়ার আগে প্রাথমিক ভাবে সর্বজিতের মৃত্যুর তদন্ত করেছিলেন লাহোর হাইকোর্টেরর বিচারপতি মজহর আলি আকবর নকভির এক সদস্যের বিচারবিভাগীয় কমিশন। তিনি মামলায় ৪০ জন সাক্ষীর বক্তব্য নথিভুক্ত করে সরকারকে রিপোর্ট দেন, যদিও তার বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়নি আজও। কমিশন সর্বজিতের আত্মীয়দেরও বিদেশমন্ত্রক মারফত নোটিস পাঠিয়ছিল যাতে তাঁরা তাঁদের বক্তব্য নথিবদ্ধ করেন, তাঁর মৃত্যু সংক্রান্ত কোনও তথ্য থাকলেও দেন। যদিও সর্বজিতের পরিবার তাদের বক্তব্য নথিভুক্ত করায়নি।
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ এ পাকিস্তানের পঞ্জাবে একাধিক বিস্ফোরণের জন্য দায়ী করে সর্বজিৎকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তাম্বা ও মুদাস্সর কমিশনকে দেওয়া বিবৃতিতে সর্বজিৎকে খুনের অপরাধ কবুল করে জানিয়েছিল, লাহোর ও ফয়সলাবাদে তার ঘটানো বিস্ফোরণে প্রাণহানির বদলা নিতে তাকে মেরেছে তারা।