ইসলামাবাদ: কথা না শুনলে স্ত্রীদের ‘একটু আধটু’ মারধর করতেই পারে স্বামীরা! পাকিস্তানের কাউন্সিল অব ইসলামিক ইডিওলজি (সিআইআই)-এর এমনই অভিমত। নারী সুরক্ষা সংক্রান্ত নয়া বিলে এ কথা বলেছে পাকিস্তানে সাংবিধানিক মর্যাদা ভোগ করা সংস্থাটি। তারা ইসলামি রীতি রেওয়াজ মেনে আইন তৈরি করতে পাক পার্লামেন্টকে সুপারিশ পাঠায়। যদিও সুপারিশগুলি মানার বাধ্যবাধকতা নেই পার্লামেন্টের।

 

সম্প্রতি পঞ্জাব বিধানসভায় পাস হওয়া নারীর ওপর হিংসা দমন আইন, ২০১৫-কে ‘ইসলাম-বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করে পাল্টা একটি বিল তৈরি করেছে সিআইআই, যা নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছে।

বিধানসভায় গৃহীত আইনটিতে মেয়েদের পারিবারিক, মানসিক, যৌন অত্যাচার থেকে আইনি সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। তাছাড়া মেয়েদের ওপর যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানানোর জন্য একটি টোল ফ্রি হটলাইন চালু করার প্রস্তাব ছিল তাতে। নির্যাতিতাদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র তৈরির কথাও বলা ছিল।

 

কিন্তু পাক সংবাদপত্র ‘দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’-এর রিপোর্ট, সিআইআই-এর ১৬৩ পৃষ্ঠার বিলে বলা হয়েছে, স্বামী ‘হালকা’ মারধর করতেই পারে স্ত্রীকে যদি সে তার নির্দেশ না মানে, সে যেমনটি চায়, তেমনটি না সাজে, তার শারীরিক সম্পর্কের চাহিদা না মেটায়। তাছাড়া কোনও মহিলা যদি হিজাব না মানে, স্বামীর মত না নিয়ে পরপুরুষের সঙ্গে মেশে, জোরে কথা বলে, কাউকে আর্থিক সহায়তা করে, তাহলেও তাকে মারধর করা অন্যায় নয়। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষার পর ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে পড়াশোনা করায় নিষেধাজ্ঞা চায় সিআইআই। তারা এও চায়, সামরিক লড়াইয়ে যেন মেয়েরা সামিল না হয়, বিদেশি প্রতিনিধিদলকে স্বাগত না জানায়, পুরুষের সঙ্গে না মেশে, অপরিচিতদের সঙ্গে দেখা করতে না যায়।

 

মহিলা নার্সরা পুরুষ রোগীর সেবা করতে পারবে না, বিজ্ঞাপনে কাজ করা চলবে না মেয়েদের, এও বলা হয়েছে সিআইআইয়ের বিলে। সন্তান ধারনের ১২০ দিন বাদে গর্ভপাত করালে তা হবে ‘হত্যা’, এও সুপারিশ বিলের।

 

বিলে আরও বলা হয়েছে, কেউ কোনও অ-মুসলিম মহিলাকে জোর করে ধর্মান্তর করালে তার তিন বছর কারবাস হোক। তবে সংশ্লিষ্ট মহিলা আগের ধর্মে ফিরে গেলে তাঁকে খুন করা হবে না।