ভোটপ্রচারে ক্ষমতায় এলে আমেরিকায় মুসলিমদের আসা নিষিদ্ধ করার হুঁশিয়ারি, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য লেনদেন বাড়ানোর ভাবনা, এ থেকেই ট্রাম্পের ভারতের দিকে আরও ঢলে পড়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত পড়ে নিয়েছেন পাক প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। লাহোরের বিদেশনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হাসান আসকারি রিজভি যেমন বলেছেন, আমেরিকা পাকিস্তানকে পরিত্যাগ করবে না বটে, তবে পাকিস্তানের প্রতি হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে তুলনায় অনেক বেশিই কঠোর হবেন ট্রাম্প। আমার ধারণা, পাকিস্তানের চেয়ে ভারত অনেক বেশি মসৃণ সম্পর্ক তৈরি করে নেবে ট্রাম্পের সঙ্গে।
ট্রাম্প অবশ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত পলিসি বিস্তারিত খোলসা করেননি, যদিও সম্প্রতি কাশ্মীর বিতর্কে ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার পরিকল্পনার কথা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। ফক্স টিভি নিউজ-কে গত মে মাসে তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তানের হাতে পরমাণু অস্ত্র আছে আর আফগানিস্তান পাকিস্তানের গায়েই, অতএব সেখানে প্রায় ১০ হাজার মার্কিন সেনা রেখেই দেওয়া হতে পারে।
ইতিহাসগত ভাবে উপমহাদেশে ইসলামাবাদ ও ওয়াশিংটন পরস্পরের শরিক হলেও পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেয়, এহেন অভিযোগ ঘিরে দু দেশের সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। পাকিস্তান অভিযোগ মানতে নারাজ। গত মে মাসে পাক ভূখণ্ডে আফগান তালিবানের এক নেতা মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ায় তীব্র হয় মতবিরোধ। পাশাপাশি উরি হামলা, পাল্টা সার্জিক্য়াস স্ট্রাইকের জেরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কেরও অবনতি ঘটেছে দ্রুত।
পাকিস্তানকে আশ্বস্ত করতে করাচির মার্কিন কনসাল জেনারেল গ্রেস শিল্টন অবশ্য গতকাল বলেছেন, আমাদের বিদেশনীতি দাঁড়িয়ে থাকে জাতীয় স্বার্থের ভিত্তির ওপর। সরকারে বদল হলেই সেই নীতি বদলায় না, অর্থাত্ পলিসিগত বড় অদলবদলের সম্ভাবনা খারিজ করে দেন তিনি।
এর মধ্যেই ট্রাম্পকে গতকাল অভিনন্দন জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তার জন্য পাক-মার্কিন দৃঢ় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক থাকা চাই, তাই তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছেন, শুভেচ্ছাবার্তায় ট্রাম্পকে এও বলেছেন শরিফ।