ওয়াশিংটন: সিমলা চুক্তির কথামতো ভারত, পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি আলোচনার পক্ষপাতী আমেরিকা। তবে সীমান্ত-সন্ত্রাসবাদে জড়িত উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলিকে পাকিস্তানের লাগাতার সমর্থন দুদেশের আলোচনার পথে ‘প্রধান অন্তরায়’ হয়ে রয়েছে বলে অভিমত ওয়াশিংটনের।
মার্কিন হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির এশিয়া, প্রশান্তমহাসাগরীয় ও পরমাণু প্রসার রোধ সংক্রান্ত সাব কমিটিকে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অস্থায়ী সহকারী বিদেশসচিব অ্যালিস জি ওয়েলস বলেছেন, আমাদের বিশ্বাস, ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তিতে যেভাবে ভারত, পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ আলোচনার কথা বলা হয়েছে, তা উত্তেজনা কমানোর সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা রাখে। তিনি জানিয়েছেন, ২০০৬-২০০৭ সালে পিছনের দরজা দিয়ে কূটনীতি চলাকালে ভারত, পাকিস্তানের কাশ্মীর সহ বেশ কিছু ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছিল বলে শোনা যায়। কোনটা সম্ভব, ইতিহাস আমাদের দেখায় বলে আগে থেকে তৈরি করা এক বিবৃতিতে মন্তব্য করেন অ্যালিস। ‘দক্ষিণ এশিয়ায় মানবাধিকারঃ বিদেশ দপ্তর ও এই অঞ্চল’ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানির প্রাক্কালে অ্যালিস বলেন, ফলদায়ক দ্বিপাক্ষিক কথাবার্তা ফের শুরু করতে হলে আস্থা গড়ে তোলা দরকার এবং সীমান্ত পেরিয়ে চালানো সন্ত্রাসবাদে যুক্ত কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলিকে পাকিস্তানের ক্রমাগত সমর্থন প্রধান অন্তরায় হয়ে রয়েছে।
পাকিস্তানের যে সন্ত্রাসবাদীরা কাশ্মীরে হিংসা ছড়াচ্ছে, তারা কাশ্মীরি ও পাকিস্তানি, উভয়েরই শত্রু, পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এই সাম্প্রতিক স্পষ্ট বক্তব্যকেও আমেরিকা স্বাগত জানাচ্ছে বলে জানান অ্যালিস। পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, লস্কর-ই-তৈবা ও জইশ-ই-মহম্মদের মতো যেসব সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে হিংসা ছড়াতে চায়, তাদের পাকিস্তানের লালন পালন করায় অস্থিরতা তৈরি হয়। ওদের কার্যকলাপের দায়দায়িত্ব পাক কর্তৃপক্ষেরই। পাকিস্তান তার ভূখণ্ডে সন্ত্রাসবাদী, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ও অপরিবর্তনীয় ব্যবস্থা নেবে, এটাই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে কোনও সফল আলোচনার ভিত বলে আমাদের বিশ্বাস। অ্যালিস এও বলেন, আলোচনায় উত্সাহ দিতে সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন সহ একাধিকবার ভারত, পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, বিদেশসচিব মাইক পম্পিও।
কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে উত্তেজনা বহাল রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তাবাহিনী, যুবকদের সংঘর্ষ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার বলে অভিমত জানান তিনি। বলেন, স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বানচাল করতে স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের স্থানীয় ও বিদেশি সন্ত্রাসবাদীরা ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, এমন খবরে আমরা বিচলিত। কাশ্মীরিদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার সমর্থন করে, কিন্তু যে সন্ত্রাসবাদীরা আলোচনা ভেস্তে দিতে হিংসা, আতঙ্ককে কাজে লাগাতে চায়, তাদের নিন্দা করে আমেরিকা।