ইসলামাবাদ: নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি বুরহান ওয়ানির জন্য ফের চোখের জল ফেললেন নওয়াজ শরিফ। তাকে ‘কাশ্মীরী মাটির ছেলে’ বলে উল্লেখ করে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বললেন, বুরহানের মৃত্যু ভারতকে এটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দিতে হবে কাশ্মীরীদের। এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় বুরহানকে ‘তরুণ নেতা’ সার্টিফিকেট দিয়ে ভারতের তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছিলেন তিনি।


বুরহান সম্পর্কে তাঁর এদিনের মন্তব্যেও কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে  নয়াদিল্লি। বুরহানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করেই অশান্তি ছড়িয়েছে কাশ্মীরে। এহেন সন্ত্রাসবাদীকে শরিফ শ্রদ্ধার চোখে দেখানোয় ভারত এদিন বলেছে, পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত, বুরহান সম্পর্কে শরিফের মন্তব্যই তার প্রমাণ।

ভারত-পাক সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সুরক্ষা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পাক পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে নরেন্দ্র মোদীর গত মাসের মন্তব্যের জবাব দেন শরিফ। মোদী কেরলে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক উপলক্ষ্যে জনসভায় পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে  গরিবি, কর্মহীনতা, নিরক্ষরতা দূর করার লড়াইয়ে নামতে বলেন। পাল্টা শরিফ আজ বলেন, ভারতের নেতারা যদি আমাদের গরিবি হটানোর সংগ্রামে নামতে বলেন, তবে তাঁদের বুঝতে হবে, চাষের জমিতে ট্যাঙ্ক নামিয়ে দারিদ্র্য দূর করা যায় না!

পাল্টা দোষারোপের সুরে তিনি দাবি করেন, আলোচনার রাস্তা থেকে পালিয়ে গিয়ে উরি হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে যুদ্ধ-পরিস্থিতি তৈরি করছে ভারতই। বলেন, ভারতকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার জন্য আমরা সব কিছু করেছি। কিন্তু ভারতই তা হতে দেয়নি। আমাদের প্রচেষ্টা বারংবার ভেস্তে দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শরিফের অভিযোগ, উরির হামলার কোনওরকম তদন্ত না করেই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারত দায়ী করল পাকিস্তানকে। কে দোষী, তা স্পষ্ট  হল না, কিন্তু তার আগেই পাকিস্তানকে এভাবে কাঠগড়ায় তোলার পিছনে নিশ্চয়ই কোনও 'মতলব' আছে ভারতের।

ভারত  নিয়ন্ত্রণ রেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন শরিফ। বলেন, ভারতের হামলায় দুজন পাক সেনা জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর পাল্টা জবাবও দেওয়া হয়েছে। পাক সেনা যে কোনও আগ্রাসন রুখতে তৈরি, এটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি এও  বলেন, কাশ্মীরী যুবকরা ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভার কাঁধে তুলে নিয়েছে।  কাশ্মীরের মানুষের দাবি ও রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রস্তাব মেনে কাশ্মীর ইস্যুর সমাধান করতে হবে।