কাবুল: আশঙ্কাই সত্যি হল। তালিবান জঙ্গিদের কাছে মাথা নত করল আফগানিস্তানের সরকার। সূ্ত্রের খবর, পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি।


রবিবার তালিবান মুখপাত্র কাবুলের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে ঢুকতেই বদলে গেছে চিত্রটা। তড়িঘড়ি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকেছে রাশিয়া। এই খবর নিশ্চিত করেছে সংবাদ সংস্থা এএফপি।


রাশিয়ার তরফে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা ভেবেই দ্রুত রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক পরিকল্পনা করা হয়েছে।এদিন কাবুলে তালিবান জঙ্গিরা ঢোকামাত্রই মার্কিন দূতাবাসের আধিকারিক, কর্মীদের হেলিকপ্টারে এলাকা থেকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার খবর বলছে, শীঘ্রই শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার হস্তান্তর হতে পারে আফগানিস্তানে। সেই কারণেই পদত্যাগ করেছেন প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি।


এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ। কাবুলে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার হস্তান্তর নিয়ে সরকারের সঙ্গে তালিবানদের আলোচনার কথা নিশ্চিত করেছে তালিবান মুখপাত্র। রবিবারই প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে ক্ষমতার শাস্তিপূর্ণ হস্তান্তর নিয়ে কথা বলতে যায় তালিবান মধ্যস্থতাকারীরা। এর আগেই সংবাদ সংস্থাগুলিকে তালিবানের মুখপাত্র জানায়, জোর করে কাবুল দখল করতে চায় না তারা। তাদের ভয় পেয়ে শহর ছাড়তে হবে না স্থানীয়দের। তালিবানরা স্থানীয় আফগানিদের সম্পত্তির কোনও ক্ষতি করবে না। কারও প্রতি কোনও ধরনের প্রতিশোধ নিতে আসেনি তারা। 


জালালাবাদের পর রবিবার বেলা ১২টার দিকে কাবুল দখল বেরিয়ে পড়ে তালিবান জঙ্গিরা। এরপরই গুলির শব্দে উত্তাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় রাজধানীতে। পরে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস থেকে জানানো হয়, চারিদিকে গুলির লড়াই চললেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। যদিও কাবুলে ঢোকার পর থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বার্তা দেয় তালিবান জঙ্গিরা। অলজজিরা ইংলিশ নিউজ চ্যানেলকে তালিবানের মুখপাত্র সুহেল শাহিন বলে, জঙ্গিরা কাবুল দখলের জন্য বাইরে অপেক্ষা করছে। তবে জোর করে ক্ষমতা দখল করতে চায় না তারা।


এরমধ্যেই বদলে যায় পরিস্থিতি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের এক আধিকারিক সংবাদ সংস্থাকে জানান, তালিবানদের হাতে ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর চাইছে আফগানিস্তানের সরকার। পরবর্তীকালে সেই খবরে সিলমোহর দেন দেশের অ্যাক্টিং ইন্টিরিয়র মিনিস্টর আবদুল সতর মীরজাকউল। টোলো নিউজকে তিনি বলেন, ''আফগানিস্তানে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হবে।''


শনিবারই দেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসরফ গনি। তিনি বলেন, ''দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে দেব না।'' দেখা যায়, তারপরও দেশের পরিস্থিতির কোনও ধরনের পরিবর্তন হয়নি। মূলত, আমেরিকার সঙ্গে শান্তি চুক্তির পরই আফগানিস্তান ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন সেনা। আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে দেশ ছাড়বে তারা। বর্তমানে মার্কিন নাগরিকদের সুরক্ষিত দেশে ফেরাতেই কাবুলে রয়েছে মার্কিন সেনাবাহিনী।