ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র পিয়ের-অঁরি ব্রহঁদেকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থার খবর, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে ছুরি জাতীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে নর্মান্দি শহরের কাছে সাঁ এতিয়েঁ ডু রুভ্রে অঞ্চলের একটি চার্চে হামলা চালায় দু’জন। চার্চের ভেতরে ঢুকে পাদরি সহ বেশ কয়েকজনকে পণবন্দি করে তারা।
সেইসময় সকালের প্রার্থনার জন্য চার্চে হাজির হয়েছিলেন ৫ জন। ভিতরে ঢুকেই উপস্থিত সকলকে পণবন্দি করে ফেলে তারা। আচমকা হামলায় তাঁরা সকলেই সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। এরমধ্যেই জাক হামলে নামের ৮৪ বছরের যাজকের গলা কেটে আততায়ীরা হত্যা করে। আরও এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়েছেন।
খবর পেয়েই, চার্চটিকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। শুরু হয় গুলিযুদ্ধ। দুই আততায়ীকেই গুলি করে হত্যা করে ফরাসি নিরাপত্তাবাহিনী। আহতকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনজনকে উদ্ধার করে পুলিশ। গোটা চত্বরে বোমা ও বিস্ফোরকের সন্ধানে চিরুনি-তল্লাশি চালায় স্পেশাল ফোর্সের সদস্যরা। যদিও, তেমন কিছু মেলেনি বলে খবর। পাশাপাশি, খবর দেওয়া হয়েছে দেশের সন্ত্রাস-দমন বাহিনীকেও।
এখনও পর্যন্ত এই হামলার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হামলার দায় স্বীকারও করেনি কোনও সংগঠন। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী বার্নার্ড ক্যাজনেভাকে সঙ্গে নিয়ে তিন চার্চের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তাঁর দাবি, এই হামলা করিয়েছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-ই। প্রসঙ্গত, ফরাসি প্রেসিডেন্ট হলেন এই রুয়াঁর বাসিন্দা।
হামলার নিন্দা করেছেন পোপ ফ্রান্সিসও। ভ্যাটিকান সিটি থেকে এক বিবৃতির মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, এই সন্ত্রাস ও তার যন্ত্রণায় তিনি গভীর শোকাহত। চার্চের মধ্যে যেভাবে একজন যাজককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি।
গত দেড় বছর ধরে বিভিন্ন নাশকতামূলক হামলার সাক্ষী ফ্রান্স। সপ্তাহ দুয়েক আগে বাস্তিল দিবসে ফ্রান্সের নিস শহরে লরি হামলায় অন্তত ৮৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছিলেন তিন শতাধিক মানুষ। ওই ঘটনায় আততায়ী ছিলেন তিউনিশিয় নাগরিক মহাম্মদ বুহলেল। হামলার দায় স্বীকার করে আইএস। তার আগে গত বছর আইএস পরিচালিত একাধিক হামলায় ফ্রান্সে মারা গিয়েছেন আরও ১৪৭ জন।
ফলত, দীর্ঘদিন ধরেই জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে ছবির দেশে। তারমধ্যে আবার আবার হামলা ফ্রান্সে।
Web Desk, ABP Ananda