বৃহস্পতিবার ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলসে তখন পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। বাইরে থেকে ভেসে আসছে পুলিশের গাড়ির সাইরেন, হেলিকপ্টারের শব্দ। ক্যাম্পাসের ভিতরেই একটি ঘরে বসে ঠকঠক করে কাঁপছিলেন বাঙালি গবেষক সোহিনী রায়। তখনও তিনি জানতেন না, যাঁর তাণ্ডবে তাঁদের এই অবস্থা তিনিও এক বঙ্গসন্তান। তাঁরই মতো এক গবেষক - মৈনাক সরকার।
ঘটনার পর দীর্ঘ সময় কেটে গিয়েছে। কিন্তু, আতঙ্ক এখনও পিছু ছাড়েনি। ভয়াবহ সেই অভিজ্ঞতার প্রতি মুহূর্ত যেন এখনও চোখের সামনে ভাসছে এই প্রত্যক্ষদর্শী বাঙালি গবেষকের।
বন্ধ ঘর থেকে আওয়াজ শুনেই টের পাচ্ছিলেন, ক্যাম্পাসে ঢুকছে একের পর এক পুলিশের গাড়ি। চক্কর কাটছে হেলিকপ্টার। ঘর থেকে বেরিয়ে সোহিনী জানতে পারেন, বন্দুকবাজের হামলায় মৃত্যু হয়েছে অধ্যাপক উইলিয়াম ক্লুগের।
আর এই খুন করেছেন যিনি, তিনিও এক বাঙালি। মৈনাক সরকার।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলসে রয়েছে আরও বহু বাঙালি গবেষক। বাঙালি বন্দুকবাজের পরিচয় জানার পর তাঁদের কেউ বিস্মিত। কেউ অস্বস্তিতে।
খড়গপুর আইআইটি-র বহু কৃতী পড়ুয়া বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে সাফল্যের নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন। কিন্তু, সেই আইআইটি-রই প্রাক্তনী মৈনাকের এই ভয়াবহ কীর্তিতে গোটা ক্যাম্পাস হতবাক!
অনেকেই ভেবে পাচ্ছেন না, অধ্যাপকদের ওপর এই আক্রোশের কারণ কী? মৈনাকের অভিযোগ ছিল, অধ্যাপক উইলিয়াম ক্লুগ কম্পিউটার কোড চুরি করে তাঁর গবেষণাপত্র অন্য কাউকে দিয়ে দিয়েছিলেন।
যদিও, ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেস কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়েছে, মৈনাকের এই অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। ফলে খুনের নেপথ্যে এটিই একমাত্র কারণ? নাকি অন্য কিছু রয়েছে? তা-ই এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।