ঢাকা: বাংলাদেশে কিছুদিনের বিরতির পর ফের কট্টরপন্থীদের হামলা শিকার আরও এক মুক্তমনা। বাংলাদেশের প্রখ্যাত লেখক ও প্রকাশক শাহজাহান বাচ্চুকে একটি দোকান থেকে টেনে বের করে এনে গুলি চালিয়ে হত্যা করল দুষ্কৃতীরা।
বিশাখা প্রকাশনি-র মালিক ৬০ বছরের শাহজাহান সোচ্চার ছিলেন ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। মূলত কবিতা প্রকাশই ছিল শাহজাহানের সংস্থার বিশেষত্ব। গতকাল সন্ধেয় মুন্সিগঞ্জ জেলায় তাঁর গ্রাম কাকালদিতেই পাঁচ দুষ্কৃতী হামলা চালায়।
ইফতারের আগে গ্রামেরই একটি ওষুধ দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন শাহজাহান। সেই সময়ই দুটি মোটরসাইকেলে সেখানে আসে পাঁচ দুষ্কৃতী। ওষুধের দোকানের বাইরে তারা বোমা ছোঁড়ে। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর দুষ্কৃতীরা দোকানে ঢুকে শাহজাহানকে টেনে বাইরে বের করে আনে এবং গুলি করে। পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক এ কথা জানিয়েছেন।
কোনও কট্টরপন্থী মৌলবাদী গোষ্ঠীই এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে জঙ্গি-দমন বিভাগের পুলিশ আধিকারিকরা বলছেন, মৌলবাদী ইসলামপন্থী উগ্রপন্থীরাই হামলা চালিয়েছে বলে অনুমান।
ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের প্রতি তাঁর অবিচল সমর্থনের জন্য কট্টরপন্থীরা তাঁকে আগেই হুমকি দিয়েছিল।
শাহজাহান ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রাক্তন জেলা সম্পাদক। মুক্তমনা লেখক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। ঢাকার বাংলাবাজার এলাকায় ছিল তাঁর প্রকাশনা অফিস।
উল্লেখ্য, ২০১৫-র ২৬ ফেব্রুয়ারি নাস্তিক লেখক তথা ব্লগার অভিজিত রায়কে ঢাকাতে খুন করে কট্টরপন্থী ইসলামিক জঙ্গিরা। সেই ঘটনা তীব্র আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। তারপর থেকেই একের পর এক ধর্মনিরপেক্ষ লেখক, ব্লগার, অনলাইন উদারমনস্ক কর্মী ও প্রকাশকদের হত্যার ঘটনা ঘটে।
২০১৬-র ৩১ অক্টোবর অভিজিতের প্রকাশক ফয়জল আরেফিন দিপানকে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা।
মুক্তমনাদের ওপর বেশিরভাগ হামলার ক্ষেত্রেই দায়স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি। এই হামলাগুলির সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েকজন উগ্রপন্থীকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।