সিঙ্গাপুর: সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ স্কুল অফ পাবলিক পলিসিতে একটি আলোচনাসভায় গিয়ে বিজেপি-কে তীব্র আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। তাঁর অভিযোগ, ভারতে এখন হুমকির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে জেতার জন্য মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরির কদর্য রাজনীতি চলছে।

ভারতের গণতন্ত্র প্রসঙ্গে রাহুল বলেছেন, ‘আমাকে যদি প্রশ্ন করেন ভারতের কোন বিষয়টা নিয়ে গর্বিত, তাহলে বলব বহুত্ববাদ। ভারতের মানুষ যা ইচ্ছা বলতে পারেন, যা খুশি করতে পারেন। তাঁদের কোনও সমস্যা হয় না। কিন্তু এটাতেই বাধা দেওয়া হচ্ছে। শুধু ভারতই নয়, বিভিন্ন জায়গায় এক বিশেষ ধরনের রাজনীতি শুরু হয়েছে। নির্বাচনে জেতার জন্য মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করা হচ্ছে।’

সুপ্রিম কোর্টের চার বিচারপতির নজিরবিহীনভাবে সাংবাদিক বৈঠক করা প্রসঙ্গে রাহুল বলেছেন, ‘বিচারপতিরা সংবাদমাধ্যম মারফত মানুষকে বলতে চেয়েছিলেন, এমন কিছু হচ্ছে যা ঠিক নয়। আমি জানি না বিচারপতিরা কী বলছিলেন সেটা আপনারা জানেন কি না, তবে এক্ষেত্রে বিতর্কের কেন্দ্রে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। ফলে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো চ্যালেঞ্জের মুখে। বিচারব্যবস্থার উপর অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ও সংগঠিত আক্রমণ চলছে। সংবাদমাধ্যম, ব্যবসায়ীদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। সারা দেশে হুমকির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’

নিজের দল ও মহাত্মা গাঁধী সম্পর্কে রাহুল বলেছেন, ‘মহাত্মা গাঁধী চেয়েছিলেন ভারতে এমন এক পরিবেশ তৈরি হোক যাতে ধর্ম, জাত নির্বিশেষে সবাই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। বিদেশিরাও যেন ভারতে এসে আরামে থাকতে পারেন, সেটা তিনি চেয়েছিলেন। কিন্তু এখন ভারতে হিংসা ও ক্ষোভের পরিবেশ দেখা যাচ্ছে। এটা ছড়িয়ে পড়ছে। আমি গর্বিত যে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করাই আমাদের লক্ষ্য। সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দেন মহাত্মা গাঁধী। কংগ্রেস দল ৭০ বছর ধরে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করে চলেছে। আমরা এমন ভারত চাই না যেখানে মানুষ কী খাবে, কী পরবে, কী বলবে সেটার জন্য তাঁদের মারধর করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আইন প্রণয়ন, উত্তর প্রদেশ পুলিশ, হরিয়ানা পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করেন। ভারতে এখন কদর্য রাজনীতি চলছে। আমরা তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করব এবং হারাব।’

বিজেপি-র কাশ্মীর নীতির সমালোচনা করে রাহুল বলেছেন, ‘২০১২ সালে ইউপিএ সরকার সন্ত্রাসবাদ দমন করেছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ফের মাথাচাড়া দিয়েছে সন্ত্রাস। ২০১৪ সালে আমি যখন জম্মু ও কাশ্মীরে গিয়েছিলাম, তখন কান্না পেয়েছিল। বছরের পর বছর ধরে নীতি তৈরি করার পর ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কী করতে পারে, সেটা আমি দেখেছিলাম।’