মুজফ্ফরাবাদ, কোটলি, চিনারি, মিরপুর, গিলগিট, দিয়ামার এবং নীলম উপত্যকার বিভিন্ন অংশের বাসিন্দারা বলছেন, জঙ্গি ঘাঁটিগুলির অস্তিত্ত্ব তাঁদের জীবনকে নরক করে তুলেছে। কারণ, ওই জঙ্গিরা বেপরোয়া, আইন-কানুন কিছুই পাত্তাও দেয় না। যে সব জঙ্গিরা এই ঘাঁটিগুলিতে প্রশিক্ষণ নেয়, তারা গ্রামে গ্রামে ঢুকে পড়ে তাণ্ডব চালায়, মহিলাদের শ্লীলতাহানি করে।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, এই এলাকাকে ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালানোর কাজে ব্যবহার করছে আইএসআই। বিভিন্ন আলাপচারিতায় স্থানীয় লোকজন ও নেতৃবৃন্দ নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন ঘাঁটিগুলির জঙ্গিদের দৈনন্দিন জোরজবরদস্তি ও তাদের হাতে হেনস্থার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এই অঞ্চলের লোকজন এভাবে জঙ্গিদের হাতে অত্যাচারিত হয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের প্রতিবাদ জানাতেও দেখা গিয়েছে। গিলগিটের এক স্থানীয় নেতা বলেছেন, কর্তৃপক্ষ যদি তালিবান জঙ্গি ঘাঁটি বন্ধ না করে এবং দিয়ামারের 'নো-গো 'এলাকা তুলে না দেয় তাহলে আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
স্থানীয় বাসিন্দারা সুষ্পষ্টভাবেই বলছেন যে, এই অঞ্চলকে শুধুমাত্র ভারতের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ চালানোর জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাসিন্দারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি সম্পর্কে তাঁদের কোনও সহানুভূতিই নেই। বরং যে কোনও জায়গার তুলনায় পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই ওই জঙ্গিদের সবচেয়ে বেশি ঘৃণার চোখে দেখা হয়।
জঙ্গিদের সঙ্গে আইএসআই-এর আঁতাত ফাঁস করে দিয়েছিলেন পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নেতা আরিফ শাহিদ। আর এর মূল্য তাঁকে প্রাণের বিনিময়ে চোকাতে হয়েছিল।
শাহিদ বলেছিলেন, ভারতের বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য দরিদ্র পাক জনগণকে ব্যবহার করে আইএসআই। ভারতের বিরুদ্ধে জিহাদই পাক সেনার একমাত্র লক্ষ্য।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে পাকিস্তানের শোষণ-অত্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই চালিয়েছিলেন শাহিদ। ২০১৩-র ১৪ মে রওয়ালপিন্ডিতে তাঁর বাসভবনের বাইরে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২।
শাহিদের মৃত্যুর তদন্ত এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাঁর হত্যাকাণ্ডের জন্য আইএসআই-কেই দায়ী করা হয়।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি ঘাঁটি হঠানোর দাবি করছেন। কিন্তু সরকার এই দাবিতে কর্ণপাত করছে না।
•
•