মস্কো: সমতলের যুদ্ধকে এ বার কার্যতই মহাকাশে টেনে নিয়ে যাওয়ার পথে রাশিয়া (Russia Ukraine War)। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করায়, তাদের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার (International Sanction on Russia) বোঝা চাপিয়েছে আমেরিকা-সহ একাধিক দেশ। তাতে এ বার পাল্টা মারের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। তবে মাটিতে নয়, আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন (International Space Station/ISS) আছড়ে ফেলার হুঁশিয়ারি দিল তাঁর সরকার।


তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে নয়, বরং জানিয়েছে যে, নিষেধাজ্ঞার চাপে স্পেস স্টেশনের কার্য পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। তার জেরে রুশ যানটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এর ফলে স্থলে-জলে যেখানেই হোক না কেন, পৃথিবীর বুকে ৫০০ টনের কাঠামো আছড়ে পড়লে তাদের কোনও দায় থাকবে না।


রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমোসের প্রধান দিমিত্রি রোগোজিন জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে রুশ যানটির পরিচালনাকার্য বিঘ্নিত হতে পারে। তাতে রাশিয়ার অংশটুকু, যা কি না গোটা স্পেস স্টেশনের কক্ষপথ নির্ধারণ করে, তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তেমন হলে ৫০০ টনের ওই কাঠামো পৃথিবীর যে কোনও অংশে, সমুদ্র অথবা সমতলে ভেঙে পড়তে পারে এবং তাতে তাদের কোনও দায় থাকবে না।


আরও পড়ুন: Russia Ukraine War: রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, প্রাণ যায়...'সন্তানকে যুদ্ধে পাঠাবেন না', রুশ মায়েদের কাতর আর্জি জেলেনস্কির


ঠিক কোথায় আছড়ে পড়তে পারে ওই কাঠামো, তার একটি সম্ভাব্য মানচিত্রও প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সেটি যে অবস্থানে রয়েছে, তাতে যে রাশিয়ায় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়ে রেখেছেন দিমিত্রি। আমেরিকাকে কটাক্ষ করে বলেন, “অন্যান্য দেশের নাগরিক, বিশেষত যুদ্ধপ্রিয় সারমেয়রা যাঁদের নেতা হয়ে বসে রয়েছেন, তাঁদের বোঝা উচিত যে, রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ফলাফল কী ভয়ঙ্কর হতে পারে।”


আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের মূল লক্ষ্য হল মহাকাশ বিষয়ক গবেষণার কাজ সহজতর করে তোলা। মহাকাশ অভিযান, মাইক্রোগ্র্যাভিটি, মহাকাশে প্রাণের সম্ভাবনা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ, পরীক্ষা নিরীক্ষা হয় সেখানে। ১৬টি দেশের সহযোগিতায় গড়ে তোলা হয়েছে বসবাসের যোগ্য এই কৃত্রিম উপগ্রহ। রকেটের মাধ্যমে সেটি পাঠানো হয় মহাকাশে। ঘণ্টায় প্রায় ২৮ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি গতিতে কক্ষপথ ধরে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সেটি। পৃথিবী থেকে এই ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ৪০৮ কিলোমিটার। এতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছে রাশিয়ার। তাদের পাঠানো যান এবং যন্ত্রাংশ সেটির কক্ষপথ নির্ধারণ করে।


এর আগে, গত মাসেও ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন আছড়ে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেয় রাশিয়া সেই সময় আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানায়, রাশিয়ার সাহায্য ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনকে কক্ষপথে ধরে রাখার সমাধান খুঁজছেন তাদের বিজ্ঞানীরা। কিন্তু প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হোক বা মহাকাশচারী, প্রথমে রাশিয়ার মহাকাশযান সয়ুজের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে পাঠানো হয়। রাশিয়ার দাবি, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার জেরে ওই মহাকাশ যানের উড়ানও আটকে রয়েছে।