কিভ: যা কিছু জীবন্ত, সতেজ ছিল, আজ তা কঙ্কালসার। প্রাণের চিহ্নটুকুও কার্যত অবশিষ্ট নেই চারিপাশে। তারই মধ্যে মানবতা, স্নেহশীলতার ছবি উঠে এল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে (Russia Ukraine War)। মুহুর্মুহু বোমা-গুলিতে যখন জতুগৃহে পরিণত হয়েছে গোটা দেশ, সেই সময় ঢাল হয়ে এক শিশুকে রক্ষা করতে দেখা গেল ইউক্রেনীয় সেনার এক জওয়ানকে (Attack on Irpin)। হানাহানি, রক্তপাতের মধ্যে মানবতা এবং স্নেহশীলতার প্রতীক হিসেবে ওই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমে (War Torn Ukraine)।
ইউক্রেনের ইরপিন থেকে ওই ছবি সামনে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, কংক্রিটের একটি সেতুর একাংশ উড়ে গিয়েছে। তার ধ্বংসস্তূপের উপর উল্টে পড়ে রয়েছে একটি গাড়ি। পাশের একটি সেতু ভেঙে প্রায় ঝুলছে। অন্যান্য ধ্বংসাবশেন প্রায় বুজিয়ে ফেলেছে নীচের জলাভূমি। সেখান থেকেই ঘুমন্ত অবস্থায় এক দুধের শিশুকে উদ্ধার করে আনছেন ইউক্রেনীয় সেনার জওয়ান। গরম কাপড়ে মুড়ে, কোলে শিশুটিকে আগলে রেখেছেন তিনি। আগ্নেয়াস্ত্রটিকে ঝুলিয়ে নিয়েছেন পিঠে। তাঁর ঠিক পিছনে একটি সারমেয়কেও দেখা যাচ্ছে।
যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে সিরিয়া থেকে পালাতে গিয়ে ২০১৫ সালে ভূমধ্যসাগরে ডুবে গিয়েছিল আয়লান কুর্দি। তুরস্কের সমুদ্রতটে ভেসে উঠেছিল একরত্তির মৃতদেহ। যুদ্ধের কথা উঠলেই আজও চোখের সামনে ভেসে ওঠে বালুতটে উল্টে থাকা আয়লান এবং জলের স্রোতে ধাক্কা খাওয়া তার নিথর দেহটি। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের এই ছবি সেই ভয়াবহতাই মনে করিয়ে দিচ্ছে অনেককে। তবে ইরপিন থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে জীবন্ত উদ্ধার করা গিয়েছে জেনে স্বস্তি পাচ্ছেন অনেকে।
বিগত ১০ দিন ধরে ইউক্রেনে লাগাতার বোমা-ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ হয়ে চলেছে। কিভ, খারকিভের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরের কথা বার বার ঘুরেফিরে এলেও, দেশের একাধিক গ্রাম, শহরের কথা কিছুটা হলেও আড়ালে রয়ে গিয়েছে। কিন্তু ইউক্রেনীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গোটা ইরপিন শহরটিই কার্যত ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। স্কুল, আবাসন, কিছুই বাদ যায়নি যুদ্ধের কবল থেকে। মারা গিয়েছেন বহু মানুষ।
শুক্রবার উত্তর-পশ্চিমের জাইতোমিরের পরমাণু কেন্দ্রে আছড়ে পড়ে শক্তিশালী বোমা। রাশিয়া তাদের বিরুদ্ধে পরমাণু শক্তি কপ্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ করে ইউক্রেন সরকার। কিন্তু সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইচ্ছাকৃত ভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তাঁর সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা চলছে বলে পাল্টা দাবি করেন তিনি।