কিভ:  যুদ্ধে শতাধিক শিশুর প্রাণ কাড়ার অভিযোগ উঠেছে আগেই। এ বার শয়ে শয়ে ইউক্রেনীয় শিশুকে অপহরণের (Ukrainian Childress Allegedly Kidnapped) অভিযোগ উঠল রাশিয়ার বিরুদ্ধে (Russia Ukraine War)। কিভের দাবি, রুশ সেনা (Russian Army) প্রায় ২ হাজার ৫০০ শিশুকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ তাদের। শুধু তাই নয়, উদ্ধারকার্যের নামে নিরী ইউক্রেনীয় নাগরিকদের অজ্ঞাত জায়গায় ধরে নিয়ে গিয়ে, দাসত্বের শৃঙ্খলে বেঁধে ফেলা হচ্ছে বলেও দাবি ইউক্রেনের।


যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে গত এক মাসে দলে দলে ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন। শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছেন পড়শি দেশগুলিতে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশই নারী এবং শিশু। শেষ স্মৃতি হিসেবে শিশুদের অনেকেই বাড়ি থেকে পুতুল, টেডিবেয়ার নিয়ে বেরিয়েছিল। সীমান্ত পেরিয়ে রোমানিয়ায় ঢোকার আগে সেগুলি রেখে দিয়েছিল সংলগ্ন একটি সেতুতে, যাতে কখনও ফিরে আসতে পারলে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী একটি বেছে নিতে পারে।


সেই ছবি ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তা দেখে যুদ্ধ, শরণার্থী (Ukrainian Refugees) সঙ্কট থেকে দূর-দূরান্তে থাকা মানুষের বুকেও মোচড় দিয়ে উঠেছে। ছিন্নমূল শিশুগুলি মানবপাচারের শিকার হতে পারে বলে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। সেই পরিস্থিতিতেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় শিশুদের অপহরণ করে নিজের দেশে গড়ে তোলা বিশেষ দাসত্ব শিবিরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলল ইউক্রেন।


ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেনো রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই মারাত্মক অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, শুধুমাত্র ১৯ মার্চই জোরপূর্বক পূর্ব ডনেৎস্ক থেকে ২ হাজার ৩৮৯ শিশুকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আন্তর্জাতিক মানবিকতা আইন অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে নিরীহ নাগরিকদের অপহরণ অপরাধযোগ্য কাজ বলে রাশিয়াকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ওলেগ। তাঁর বক্তব্য, “অভিভাবকের নিরাপদ ছত্রাছায়া থেকে আমাদের ছেলেমেয়েদের বঞ্চিত করছে রাশিয়া। রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে তাদের জীবনকে ঝুকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”


অপহরণের অভিযোগ আনলেও, ইউক্রেনীয় শিশুদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা নিয়ে কিছু খোলসা করেননি ওলেগ। তবে কিভের দাবি, মারিউপোল থেকেও কমপক্ষে ৫ হাজার ইউক্রেনীয় নাগরিককে উদ্ধারকার্যের নামে কোথাও অজ্ঞাত জায়গায় সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে রাশিয়া। মারিউপোলের মেয়র ভাদিম বয়শেঙ্কোর মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (World War 2) সময় জোর করে ইহুদিদের ধরে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রাখা হত। ভ্লাদিমির পুতিন সেই পথেই হাঁটছেন।


ইউক্রেনের সাংসদ ইনা সোভসান জানিয়েছেন, রাশিয়ার দুর্গম জায়গায় ইউক্রেনীয় নাগরিকদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জোর করে মুচলেকা সই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে সেখানে দু’-থেকে তিন বছর কাটাতেই হবে বলে। সেখানে বিনা পারিশ্রমিকে শ্রমদানেও রাজি করানো হয়েছে সকলকে। রাশিয়ার হাতে বন্দি ইউক্রেনীয়দের দাসত্বে বাধ্য করা হচ্ছে বলে মত ইনার।