নিউইয়র্ক : ভয়ঙ্করভাবে জখম। হাসপাতালের বেডে শুয়ে চলছে লেখকের লড়াই। তাঁর অনুরাগীদের জন্য খুব একটা আশার খবর নেই। 
ভেন্টিলেশনে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সলমন রুশদি।


কেমন আছেন লেখক ? 
হাসপাতাল সূত্রে খবর,  একটি চোখে দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে লেখকের। রুশদির হাতের স্নায়ুও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যকৃতেও ছুরির আঘাত লাগায়, তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বুকারজয়ী লেখকের এজেন্ট। নিউইয়র্কে সলমন রুশদিকে খুনের চেষ্টা হয়। মঞ্চে ভাষণ দেওয়ার সময় ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় দ্য স্যাটানিক ভার্সেসের লেখককে।


শুক্রবার গুরুতর জখম রুশদিকে দ্রুত এয়ারলিফট করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৪ বছরের হামলাকারীকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত হাদি মাতার নিউ জার্সির বাসিন্দা।


কে আক্রমণ চালাল ? 
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের পরিবারে এলোপাথাড়ি র সঙ্গে লেবাননের হেজবোল্লা জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে এবং অভিযুক্ত নিজে ইরানের ইসলামিক সরকারের আদর্শে অনুপ্রাণিত। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয় সলমন রুশদির বিতর্কিত বই দ্য স্যাটানিক ভার্সেস। বইটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পাশাপাশি, রুশদির বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে ইরান। 






স্থানীয় পুলিশ বলেছে যে সলমন রুশদিকে ঘাড়ে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে তাদের মনে হয়েছে। তাঁকে হেলিকপ্টারে করে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থ নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। হামলাকারীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, আততায়ীর মাথায় কালো হেডপিস ছিল। এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, 'আমার মনে হয়েছিল হামলাকারী ঘুঁসি মারছে, পরে বোঝা যায় যে ছুরির আঘাত করছে।' 


যে অনুষ্ঠানে এদিন রুশদি অংশগ্রহণ করেছিলেন, আয়োজকদের ওয়েবসাইট অনুযায়ী তার আলোচ্য বিষয় ছিল 'The United States as asylum for writers and other artists in exile and as a home for freedom of creative expression'


একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি:
এর আগে তাঁর লেখা বইয়ের জন্য একাধিকবার খুনের হুমকি পেয়েছিলেন সলমন রুশদি। তাঁর লেখা বই 'দি স্যাটানিক ভার্স'-এর কারণেই এই হুমকি দেওয়া হয়েছিল। একাধিক দেশে এই বইটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৯৮৮ সাল থেকে ইরানে (Iran) এই বইটি নিষিদ্ধ। বইয়ের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি তাঁর 'মাথার দাম' ঘোষণা করেছিলেন ইরানের এক নেতা। যদিও পরে ১৯৯৮ সালে থেকে ইরানের সরকার বলে সেই ফতোয়া তারা কার্যকর করবে না।   


বর্ষীয়াণ লেখককে হত্যার জন্য ইরানের বিভিন্ন সংস্থা ৩০ লক্ষ ডলারের বেশি পুরস্কার ঘোষণা করে। সুরক্ষার্থে রুশদি বেশ কয়েক বছর ধরে ব্রিটিশ সরকারের নিরাপত্তায় আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিলেন এবং ২০০০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। তারপর থেকে জনসমক্ষেই ঘোরাফেরা করতেন। 


তিনি ১৯৮৯  সালে তাঁকে একবার মারার চেষ্টা হয়। তার থেকে রক্ষা পান তিনি।  লন্ডনের একটি হোটেলে একটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে, যেখানে তিনি ছিলেন। হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলাম গ্রুপের মুজাহিদিন। তিনি আছেন অল কায়দা হিট লিস্টেও।