লাহোর: ফের সন্ত্রাস-নিশানায় রক্তাক্ত পাকিস্তান।


সোমবার শক্তিশালী বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল প্রতিবেশী দেশের লাহোর। পাক পঞ্জাব বিধানসভা ভবনের বাইরে একটি প্রতিবাদ-মিছিলের মধ্যে ঘটা এই আত্মঘাতী বিস্ফোরণে অন্ততপক্ষে ১৬ জন মারা গিয়েছেন। নিহতদের তালিকায় রয়েছেন পুলিশের তিন শীর্ষকর্তা। আহতের সংখ্যা ৬০। হামলার দায় স্বীকার করেছে পাক তালিবান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কোয়েট্টায় দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে। সেখানে ২ পুলিশকর্মী মারা গিয়েছেন। আহত হন আরও ৬।


পুলিশ জানিয়েছে, এদিন বিকেলে লাহোরের মল রোডের ওপর নতুন ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন বহু অষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং কেমিস্ট। ঠিক ওই সময়ে বিস্ফোরণটি ঘটে।


লাহোরের পুলিশ প্রধান আমিন ওয়েন্স জানান, নিহতদের তালিকায় রয়েছেন লাহোরের ট্রাফিক পুলিশ প্রধান (অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন) আহমেদ মবিন ও পুলিশের সিনিয়র সুপারইনটেনডেন্ট জাহিদ গোন্ডাল মারা যান। এছাড়া, আরও এক শীর্ষ কর্তা সহ তিন পুলিশ আধিকারিক মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মবিন এসে যখন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, ঠিক তখনই মিছিলের মধ্যে এক মোটরসাইকেল আরোহী ঢুকে পড়ে নিজেকে উড়িয়ে দেয়। সঙ্গেসঙ্গে জোরালো বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা চত্বর। পুলিশ সূত্রে খবর, আত্মঘাতী হামলাকারী ওই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।


এদিনের হামলার দায় স্বীকার করেছে পাক তালিবানের গোষ্ঠী জামাত-উল-আহরার। গত বছর ২৭ মার্চ, লাহোরের গুলশন-এ-ইকবাল পার্কে ইস্টার উৎসবে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। সেবার প্রায় ৭৫ জন নিহত হয়েছিলেন। তখনও হামলার দায় স্বীকার করেছিল এই সংগঠনই।


বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশেপাশের বহু বাড়ির জানলার কাচ ভেঙে পড়ে। কিছু গাড়িতে আগুন লেগে যায়। ওই এলাকায় বহু সরকারি দফতরও রয়েছে। ফলে, জায়গাটি সবসময় জমজমাট থাকে। সর্বদা সেখানে পুলিশের উপস্থিতিও থাকে। তার ওপর এদিনের মিছিলকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করতে শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত হয়েছিলেন। যদিও, তার মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটে যায়।


ঘটনাস্থলে পৌঁছয় অ্যাম্বুলেন্স ও দমকল-বাহিনী। এছাড়া, পাঠানো হয় পাক সেনা ও আধাসামরিক পাক রেঞ্জার্সের পৃথক দল। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফরেন্সিক টিমও। তারা বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় মেয়ো হাসপাতাল ও গঙ্গারাম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জানা গিয়েছে, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে খবর।


এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কোয়েট্টায় দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে। সেখানে ২ পুলিশকর্মী মারা গিয়েছেন। আহত হন আরও ৬। জানা গিয়েছে, করাচির কাছে সারিয়াব রোডে বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে  আচমকা বিস্ফোরণ ঘটলে ২ পুলিশকর্মী প্রাণ হারান। আহত হয়েছেন আরও ৬ জন। নিহতদের মধ্যে একজন বম্ব ডিজপোজাল স্কোয়াডের সদস্য কমান্ডার আব্দুল রাজ্জাক বলে জানা গিয়েছে।