নয়াদিল্লি: শুধু চিন- ফিলিপিনস সম্পর্কেই প্রভাব ফেলবে না। দক্ষিণ চিন সাগরের মালিকানা নিয়ে আজ ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ আরবিট্রেশন যে রায় দেবে, তার ফল সুদূরপ্রসারী হবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক দুনিয়া। দক্ষিণ চিন সাগরের সিংহভাগ চিন গায়ের জোরে দখল করেছে বলে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ফিলিপিনস। তাদের অভিযোগ, গায়ের জোরে অন্য দেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ে বেজিং দক্ষিণ চিন সাগরের ৯০ শতাংশই দখল করে নিয়েছে, তাদের এই অবস্থান আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী। আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আদালতের রায় চিনের বিরুদ্ধে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আর তা হলে চিন কী করবে তার দিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।


চিন প্রথমেই এ ব্যাপারে আইনের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করেছে, তারপর অন্য দেশগুলিকে ভয় দেখিয়ে নিজেদের পক্ষে সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টা করেছে। আমেরিকাকে হুমকি দিয়েছে, দক্ষিণ চিন সাগরে টেনশন তৈরির চেষ্টা করলে ফল ভাল হবে না। তাদের বক্তব্য, দক্ষিণ চিন সাগরে আমেরিকা বহিরাগত, স্রেফ কৌশলগত উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য এ ব্যাপারে নাক গলাচ্ছে তারা। চিন যেভাবেই হোক, তার সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা করবে।

অনেকেই মনে করছেন, আন্তর্জাতিক আদালত এমন রায় দেবে, যাতে মনে হবে, কারওরই পুরোপুরি হার হল না, দু’পক্ষই দাবি করতে পারবে, রায় গিয়েছে তাদের পক্ষে। কিন্তু যদি রায় চিনের বিরুদ্ধে যায়, তবে দক্ষিণ চিন সাগরকে এয়ার ডিফেন্স আডেন্টিফিকেশন জোন ঘোষণা করে তারা গোটা এলাকা অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে মুড়ে দিতে পারে, যা আমেরিকা সহ অন্য রাষ্ট্রগুলি ভাল চোখে দেখবে না। বিতর্কিত প্রবাল প্রাচীর স্কারবোর শোল গায়ের জোরে দখল করতে পারে তারা। চিন ছাড়া তাইওয়ান ও ফিলিপিনস ওই এলাকা নিজেদের বলে দাবি করে আসছে। পাশাপাশি আদালতের রায় এক কথায় মেনেও নিতে পারে, যদিও বর্তমান পরিস্থিতিতে তা কার্যত অসম্ভব।

এই রায়ের সঙ্গে ভারতের নিরাপত্তা এবং আর্থিক স্বার্থও জড়িত। দক্ষিণ চিন সাগরে বাণিজ্য চালায় ভারত, তার নিরাপত্তা ও সামুদ্রিক পথে যোগাযোগের সুবিধার জন্যও এই রায় দিল্লির কাছে রীতিমত গুরুত্বপূর্ণ।