সোল: দেশের প্রেসিডেন্টকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলেন ইলেক্ট্রনিক্স জায়ান্ট স্যামসাঙের প্রধান লি-জায়ে ইয়ং। তাঁকে পাঁচ বছরের হাজতবাসের সাজা শোনাল দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত।
এদিন সোলের সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট আদালত জানায়, ৪৯ বছরের ইয়ং তৎকালীন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক গেউন-হাই ও তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে ঘুষ দিয়েছিলেন। লক্ষ্য ছিল, স্যামসাং সংস্থায় নিজের আধিপত্য স্থাপনে সরকারি মদত পাওয়া।
পরবর্তীকালে, এই তথ্য ফাঁস হওয়ার পর ফেব্রুয়ারি মাসে পার্ককে গ্রেফতার করা হয়। ফলে, তাঁকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এদিন তিন বিচারকের প্যানেল লি-কে স্যামসাঙের তহবিল তছরুপ, বিদেশে থাকা সম্পত্তি লুকনোর চেষ্টা, সংস্থার আর্থিক লাভ লুকনোর চেষ্টা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও মিথ্যে সাক্ষ্য দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে।
সরকারি কৌঁসুলিরা লি-র ১২ বছরের কারাবাসের আবেদন করে। কিন্তু, বিচারকরা পাঁচ বছরের সাজা শোনান। রায় শোনাতে গিয়ে আদালত বলে, লি এবং স্যামসাঙের যে আধিকারিকরা তাঁকে উপদেশ দিয়েছেন—এঁদের সকলের ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজ ও অর্থনীতিতে বিশাল নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
আদালত আরও জানায়, এই মামলায় রাজনীতির সঙ্গে পুঁজিবাদের অশুভ আঁতাঁতের বিষয়টি প্রকট হয়ে পড়েছে। এর ফলে, প্রেসিডেন্টের কাজ নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। পাশাপাশি, স্যামসাং গোষ্ঠীর নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
প্রসঙ্গত, স্যামসাং সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন লি-র ঠাকুর্দা। বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাণকারী সংস্থা হল স্যামসাং। ফোনের পাশাপাশি, টেলিভিশন ও মাইক্রোচিপও বানায় এই সংস্থা। ২০১৪ সালে লি-র বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তারপর থেকে সংস্থার দায়িত্বভার নিজের হাতে তুলে নেন লি।
বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে পরিচিত স্যমসাং। দেশের রাজনীতিতে স্যামসাঙের প্রভাব এতটাই বেশি যে দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ একে ‘রিপাবলিক অফ স্যামসাং’ বলেও উল্লেখ করে থাকে।