কাবুল : আফগানিস্তানে পদত্যাগের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। রক্তক্ষয় এড়াতেই পদত্যাগ বলে দাবি করেছেন তিনি। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রীও। রাষ্ট্রপতি ভবনের দখল নিয়েছে তালিবানরা। কাবুলের নতুন গভর্নর হলেন মোল্লা শিরিন। পদগ্রহণ করেই শিরিনের আশ্বাস,‘কাবুলের বাসিন্দাদের জীবন এবং সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকবে। সবাই শান্ত থাকুন।’
তালিবান শাসনে কট্টরপন্থীদের ফরমানে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল দেশবাসীর প্রাণ। সবথেকে বেশি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছিল মহিলাদের। যদিও এবার কাবুল দখল করেই উল্টো কথা বলছে খোদ তালিবান মুখপাত্রও। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জঙ্গি গোষ্ঠীর মুখপাত্র জানিয়েছে, মহিলাদের তারা সম্মান করে। সেই কারণে এবার থেকে শিক্ষা বা কাজের জন্য একা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন মহিলারা। তবে রাস্তায় বেরোনোর আগে অবশ্যই হিজাব পড়তে হবে তাদের।
অন্যদিকে আফগানিস্তানে পালাবদলের পরেই বিশ্ব-রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছে ব্রিটেন ও রাশিয়া। আমেরিকা-সহ ৬৫টি দেশ হিংসা, প্রাণহানি এড়ানোর আবেদন জানিয়েছে। এর পাশাপাশি, ভারতীয় সময় আজ সন্ধে সাড়ে ৭টায় ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠক হতে চলেছে, যাতে আলোচনা হবে আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে। ২ দশক পরে আফগানিস্তান ফের তালিবানের দখলে। সিঁদুরে মেঘ দেখছে নয়াদিল্লি। ভারত যদি সেনা পাঠায়, তাহলে ফল ভালো হবে না বলে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তালিবান। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, পাকিস্তানি মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করে ভারত বিরোধী কার্যকলাপ চালাতে পারে। মার খেতে পারে একাধিক প্রকল্পের কাজ। আফগানিস্তানে পরিকাঠামো উন্নয়নে ৫০০টিরও বেশি প্রকল্পের কাজ চলছে, যেগুলিতে অর্থ সাহায্য করছে ভারত। ২২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। জারাঞ্জ থেকে দেলারাম পর্যন্ত ২১৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে বিনিয়োগ করা হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। আফগান-ইরান সীমান্তে এই রাস্তার সামরিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনেক। এছাড়াও সালমা বাঁধ তৈরিতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৮০০ কোটি টাকা। আফগানিস্তানে নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে ৬৭০ কোটি টাকা লগ্নি করে নয়াদিল্লি। ২০১৫-তে আফগানিস্তানের নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।