কাবুল: আফগানিস্তানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে হলে আগাম অনুমতির প্রয়োজন হবে। নতুন সরকার গঠনের পর এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করল তালিবান। 


সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, তালিবানের তরফে যে শর্তগুলি রাখা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে-- যে কোনও ধরনের বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ প্রদর্শন করার আগে আইনমন্ত্রকের থেকে অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি, প্রতিবাদের উদ্দেশ্য, স্লোগান, স্থান, সময় এবং সমস্ত বিবরণ সরকারী কর্তৃপক্ষকে ২৪-ঘণ্টা আগে জানাতে হবে।


সম্প্রতি, আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশে তালিবান বিরোধী মিছিলে অংশগ্রহণ করেছে সাধারণ মানুষ। গজনি, মাজার এ শরিফে তালিবানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছেন আফগানরা। 


এছাড়া, তালিবান শাসনের বিরুদ্ধে বালকান, কাবুল, বরওয়ান ও বাদকশন প্রদেশেও মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন। এমনকী, তালিবানকে মদতের কারণে কাবুলে পাকিস্তানের দূতাবাসের বাইরেও বিক্ষোভ দেখান অনেকে।


এই প্রেক্ষিতে, তালিবানের এই নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মহল। গত ৭ তারিখ, হাক্কানি গোষ্ঠীকে গুরুত্ব দিয়েই নতুন মন্ত্রিসভা তৈরি করে তালিবান সরকার। 


আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে কট্টর ভারত বিরোধী বলে পরিচিত হাক্কানি গোষ্ঠীর প্রধান সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। পাশাপাশি আরও হাক্কানি নেটওয়ার্কের আরও ৩ জন ঠাঁই পেয়েছে মন্ত্রিসভায়। প্রধানমন্ত্রী হন মোল্লা হাসান আখুন্দ। উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুল গনি বরাদর।


নতুন তালিবান সরকারকে এখনই স্বীকৃতি নয় বলে জানিয়ে দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সাংবাদিক বৈঠকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেন, আগে ওদের অনেক কিছু প্রমাণ করে দেখাতে হবে। আপাতত যুদ্ধ-বিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে আটকে থাকা বৈধ মার্কিন নাগরিকদের দেশে ফেরানোটাই সবথেকে জরুরি। 


আটকে থাকা বাকি নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফেরাতে তালিবানের সঙ্গে কথা চলছে মার্কিন প্রশাসনের। বিশ্বের কাছে তালিবানরা সম্মান অর্জন করেছে বলে মনে করেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট, প্রশাসন অথবা জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। 


এই তদারকি সরকারে রয়েছে জেলখাটা চার তালিবানও। ফলে ওই প্রশাসনকে আমরা কোনও স্বীকৃতি দিচ্ছি না। তালিবান সরকারকে নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল হোয়াইট হাউস। 


তবে, আমেরিকার উল্টো পথে হেঁটে আফগানিস্তানের নতুন তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিল চিন। তিন সপ্তাহের নৈরাজ্যের অবসানের পর নতুন সরকারকে স্বাগত, ঘোষণা বেজিংয়ের। 


আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না চিন। আফগানিস্তানের সঙ্গে স্থিতিশীল বিদেশ নীতি চায় বেজিং, বার্তা চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনের।