নয়া দিল্লি: ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথমবার ভারত সম্পর্কে নিজের অবস্থান মৌখিকভাবে স্পষ্ট করল তালিবান। এই সংগঠনের বর্ষীয়ান নেতা শের মহম্মদ আব্বাস স্তানেকজাই জানান যে তাঁরা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। ভারতকে উপমহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বর্ণনা করেই এই মন্তব্য করেন ওই নেতা।


একটি সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার সময় স্তানেকজাই বলেন কাবুলে একটি সরকার গঠনের জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সেই সরকারে বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা প্রতিনিধিত্ব করতে থাকবেন বলেই জানিয়েছেন। শনিবার তালিবানের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করা প্রায় ৪৬ মিনিটের ভিডিওতে স্তানেকজাই বলেন, "আমরা ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি এবং সেই সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই।"


শের মহম্মদ স্তানেকজাই তালিবান সংগঠনের প্রথম সারির একজন নেতা। ১৫ অগাস্ট কাবুল ক্ষমতা দখল করার পর অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বিবৃতিও দিতে শোনা যায় তাঁকে। ভারত, চিন, পাকিস্তান ও রাশিয়ার মতো আঞ্চলিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে পাস্তো ভাষায় জানান তিনি।


এদিকে, ভারতের সঙ্গে অতীতে আফগানিস্তান সরকারের যে সু-সম্পর্ক ছিল, বরাবর তাকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েই চিরকাল দেখেছে পাকিস্তান। যদিও এবারের বার্তায় পাকিস্তানের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন ওই তালিবান নেতা। 


স্তানেকজাই বলেন, ‘পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে যে বাণিজ্য চলে, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সঙ্গে আকাশপথে বাণিজ্য করিডরও খোলা থাকবে।’


এদিকে, আফগানিস্তানের থেকে প্রচুর পরিমাণে ড্রাই ফ্রুট আমদানি করে থাকে ভারত। হিসেব অনুযায়ী, ভারতের মোট চাহিদার ৮৫ শতাংশ ড্রাই ফ্রুটই ভারত আমদানি করে আফগানিস্তান থেকে । এছাড়াও আফগানিস্তানের থেকে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আটা, কিশমিশ, অ্যাপ্রিকট, আঞ্জির, কাজু বাদাম এবং জিরে ও হিংয়ের মতো অনেকরকম মশলাও আমদানি করে ভারত। আফগানিস্তানের দখল হাতে নিয়েই তালিবানদের ফতোয়া জারি করেছিল, ভারতের সঙ্গে আপাতত কোনও ব্যবসা-বাণিজ্য বা লেনদেন হবে না তাদের।