কাবুল: পঞ্জশির দখলে ফের ব্যর্থ তালিবান। পঞ্জশিরে ঢোকার মুখেই তালিবানকে রুখে দিল পিপলস রেজিস্ট্যান্স ফোর্স। বাগলনের আন্দারাবেই আটকে গেল তালিবান বাহিনী। দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু, আহত বহু। বিরোধী জোটের প্রত্যাঘাতে পিছু হটল তালিবান। অস্ত্র-সহ আত্মসমর্পণ তালিবান বাহিনীর। আন্দারাবে আরও বাহিনী পাঠানো হচ্ছে, জানাল তালিবান। 


অবস্থানগত কারণেই ফের তালিবানের অধরা পঞ্জশির। উত্তর-পূর্ব হিন্দুকুশ পর্বতমালার কোলে অবস্থিত পঞ্জশির উপত্যকা এতটাই দুর্গম যে সেখানে পৌঁছতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে তালিবান। ব্যর্থ হয়েছে রুশ বাহিনীও। কাবুল থেকে পঞ্জশিরের দূরত্ব ১০২ কিমি। কিন্তু কাবুল থেকে পঞ্জশির পৌঁছতে গেলে পাড়ি দিতে হয় ২৬৩ কিমি পথ। পঞ্জশির যেতে হয় বাগলন হয়ে। ঠিক সেখানেই তালিবানকে আটকে দিয়েছে বিরোধী জোট। তালিবানের দাবি, বিরোধী জোটের প্রতিরোধের মোকাবিলায় এবার আরও বাহিনী পাঠিয়ে পঞ্জশির ঘিরে ফেলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।


এ যেন মৃত্যুর খেলা! আফগানিস্তান যেন মৃত্যুপুরী! গুলি, গ্রেনেড, আর্তনাদ, রক্তপাত। তালিবানি শাসন ফিরতেই বদলে গেছে দেশটা। আফগানিস্তানের অধিকাংশ প্রদেশই এখন তালিবানের দখলে। কিন্তু তালিবান নেতাদের একমাত্র মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্জশির। এখানেই নর্দান অ্যালায়েন্সের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে তালিবান। নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বঘোষিত কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ ও আহমেদ মাসুদ।


আফগানিস্তানের উত্তর-পূর্বে হিন্দুকুশের কোলের এক উপত্যকা পঞ্জশির। উত্তরে বাগলন ও তাখর প্রদেশ, পূর্বে বাদাকশন ও নুরিস্তান, লাঘমান ও কাপিসা দক্ষিণে, পশ্চিমে পারওয়ান। নর্দান অ্যালায়েন্সের প্রতিরোধে এখনও পঞ্জশির দখল করতে পারেনি তালিবান। এই পরিস্থিতিতে চারপাশ থেকে পঞ্জশির ঘিরে ফেলার কৌশল নেয় তারা। শনিবার রাতেই তালিবান বাহিনী পৌঁছে যায় বাগলান প্রদেশের আন্দারাবে। এখান থেকে নর্দান অ্যালায়েন্সের হাতে থাকা পঞ্জশিরের দূরত্ব মাত্র ৬৮ কিলোমিটার। নর্দান অ্যালায়েন্সের গেরিলা বাহিনীর দাপটে ইতিমধ্যেই বাগলন প্রদেশের বানু, পুল-এ হিসার এবং দে সালেহ জেলা থেকে পিছু হটেছে তালিবান। এই পরিস্থিতিতে আন্দারাবে বাহিনীর সংখ্যা বাড়াতে শুরু করেছে তালিবান। দু’দশক আগেও আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করা তালিবানের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গিয়েছিল পঞ্জশির। প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল নর্দান অ্যালায়েন্স। এবারও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।