কাবুল: উত্তর আফগানিস্তানের পঞ্জশিরে সম্মুখ সমরে তালিবান ও বিরোধীজোট। গতকাল রাত থেকে বেদখল হওয়া জেলাগুলিতে ঢুকছে তালিবান বাহিনী। পঞ্জশিরের আন্দারাব এলাকা ঘিরে ফেলেছে তালিবান বাহিনী। 


অন্যদিকে, তালিবানকে ঠেকাতে মরিয়া বিরোধীপক্ষ। পঞ্জশিরে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নর্দার্ন অ্যালায়েন্সকে আত্মসমর্পণের জন্য ৪ ঘণ্টা সময় দিল তালিবান। 


ধীরে ধীরে তালিবান শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ছে আফগানিস্তান। পঞ্জশিরের বাগলান প্রদেশের তিনটি জেলায় স্থানীয়দের প্রতিরোধে গতকাল পিছু হঠে তালিবান। 


তিনটি জেলা পুনরুদ্ধার করে তালিবান বিরোধী গোষ্ঠী। সংঘর্ষে ৪০ জন তালিবান নিহত, ১৫ জনকে বন্দি করেছে নর্দার্ন অ্যালায়েন্স। 


কাবুল পতনের পরেই তালিবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা জানিয়েছিলেন স্বঘোষিত কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ্। তাঁর প্রতি সমর্থন জানাতে সেখানে ট্যাঙ্ক নিয়ে হাজির হয়েছে তালিবান বিরোধী আফগান সেনা। 


আফাগানিস্তানের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লা মহম্মদির দাবি, দেশের উত্তর পূর্বের বাঘলান প্রদেশের পুল-ই-হেসার, দেহ সালহা এবং বানু--এই তিনটি জেলা পুনর্দখল করেছে তালিবান বিরোধীরা। 


পাশাপাশি হিন্দুকুশ পর্বতমালার কোলে এখনও দুর্জয় ঘাঁটি পঞ্জশির প্রদেশ। একদিকে যখন কাবুলের রাস্তায় বন্দুক হাতে দাপিয়ে বেরাচ্ছে তালিবান, তখন ১২৫ কিলোমিটার দূরে, পঞ্জশিরে শুধুই নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের জয়জয়কার। 


প্রত্যেকটা গাড়িতে উড়ছে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের সবুজ-সাদা-কালো পতাকা। সূত্রের খবর, এখানে সামিল হয়েছে কিছুদিন আগে পিছু হটা আফগান সেনাবাহিনীর একাংশ। 


এদিকে, কাবুল বিমানবন্দরে তালিবানের গুলি, পালাতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে আফগানিস্তানের ৭ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তালিবান দখলে চলে যাওয়ার পরই আফগানিস্তান ছাড়তে মরিয়া হাজার হাজার মানুষ। কাবুল বিমানবন্দরের দিকে ধেয়ে আসছে ভিড়।পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মার্কিন সেনা।


আফগানিস্তান তালিবানের দখলে চলে যাওয়ার পর আমেরিকাকে নতুন করে হুঁশিয়ারি দিল জঙ্গি সংগঠন আইএস। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দরে না আসার পরামর্শ দিল মার্কিন প্রশাসন।


কাবুলের মার্কিন দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে, কাবুল বিমানবন্দরের গেটে ভিড় রয়েছে। রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তালিবান। চলছে নৃশংস অত্যাচার। এর মধ্যে আফগানিস্তানে আল-কায়দার উপস্থিতি নিয়ে পেন্টাগনের সতর্কবার্তা প্রকাশ্যে এসেছে।


তারপরই মার্কিন প্রশাসনের নির্দেশ ছাড়া সে দেশের নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দরে আসায় নিয়ন্ত্রণ জারি হয়েছে। একইসঙ্গে জার্মানিও আফগানিস্তানে থাকা তাদের নাগরিকদের বিশেষ অনুমতি ছাড়া কাবুল বিমানবন্দরে আসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।