নয়াদিল্লি: ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। লাগাতার হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। পাল্টা মিসাইল হামলা চালাচ্ছে ইরানও। চলছে হুমকি-পাল্টা হুমকি। এরইমধ্য়ে ইজরায়েল প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছে যে ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সদর দফতর ধ্বংস করে দেওযা হয়েছে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইজরায়েল কাৎজ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ''ইজরায়েলের যুদ্ধবিমান ইরানের Internal Security Headquarters পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, ইরানে তৈলখনিতে ইজরায়েলের একের পর এক হামলার পর ইজরায়েলের মধ্যাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছিল। তেল আবিব মেট্রোপলিটন এলাকার বাত ইয়াম শহরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মৃত্যু হয়েছিল। শুধু মিসাইল নয়, ইজরায়েলে ড্রোন হামলাও চালিয়েছিল ইরান। বিরাট বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল এলাকা। এরপরই ইজরায়েলের সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছিল যে বুধবার তেহরানের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হবে। সেই মতই এবার সে দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সদর দফতরে আঘান হানা হল। 

এদিকে, ইরানের ইসলামিক রিভ্যলিউশনারি গার্ডের তরফে জানানো হয়েছে, তেহরানের উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলীয় শহরতলীতে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র হানা হয়েছে। ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা খামেনেইকে শেষ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ চেয়ে ঠাণ্ডা গলায় হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাল্টা খামেনেই স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, মাথা নত করার কোনও প্রশ্নই নেই! মঙ্গলবার রাতে একের পর এক সোশাল মিডিয়া পোস্টে ইরানের উদ্দেশে কার্যত ঠাণ্ডা গলায় হুমকি দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কার্যত আল্টিমেটামের সুরে তিনি লেখেন, তথাকথিত সর্বোচ্চ নেতা কোথায় লুকিয়ে আছেন, তা আমি জানি। তিনি খুব সহজ টার্গেট। তবে আপাতত সুরক্ষিত। আমরা তাঁকে মারব না। অন্তত এখনই তো নয়। আমরা সাধারণ মানুষ বা সেনার দিকে মিসাইল ছুড়তে চাই না। তবে আমাদের ধৈর্য কমছে। সেই সঙ্গে সরাসরি ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণও দাবি করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। উত্তর তেহরানের পাহাড়ি এলাকায় পরিবার নিয়ে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন খামেনেই। তিনি বলেন,''জঙ্গি ইহুদি শাসনব্যবস্থাকে আমাদের কড়া জবাব দিতেই হবে। আমরা ইহুদিদের প্রতি কোনও দয়া দেখাব না। সকলের জেনে রাখা উচিত, ইরান আত্মসমর্পণ করবে না। আমেরিকা কোনও রকম হামলা করলে ভয়ঙ্কর পরিণতির জন্য তৈরি থাকতে হবে।''

উল্লেখ্য, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চিন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার হুমকি দিয়ে যে বার্তা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট দিয়েছেন, তা বিশ্বব্যাপী নিয়ম লঙ্ঘনকারী বিপজ্জ্বনক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড বলে মনে করছে চিন। ইরানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে কথা বিবেচনা করে নিজেদের নাগরিক সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে চিন।

উল্লেখ্য, ইরানে এই মুহূর্তে প্রায় চার হাজারের বেশি ভারতীয় নাগরিকের বাস। তাঁদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। এই পরিস্থিতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের তরফে তেহরানের ভারতীয় দূতাবাসে যোগাযোগ করে উত্তর ইরান থেকে ১২০ জন শিক্ষার্থীকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়া হয়েছে আর্মেনিয়ায়।