শিকাগো: মৃত্যুপথযাত্রী এক শিশুর আগাম ক্রিশমাসের শেষ ইচ্ছাপূরণ করল সান্টা ক্লস। উপহার পাওয়ার পরই সান্টার কোলে মৃত্যু শিশুটির।


ক্রিশমাস এখনও কয়েক সপ্তাহ দূরে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনিসি প্রদেশের এক পাঁচ বছরের এক শিশুর জীবনে বাকি ছিল মাত্র কয়েকটা দিন-ই। জটিল রোগে আক্রান্ত ওই শিশু প্রায় মৃত্যুপথে দাঁড়িয়ে ছিল।


এই অবস্থায়, তার আশঙ্কা ছিল, হয়ত এবছরের ক্রিশমাস তার দেখা হবে না। তার এই আর্জি পৌঁছয় ‘সান্টা ক্লসের’ কাছে। পরের দিনই, ওই শিশুর সামনে হাজির হন সান্টা। ছোট্ট শিশুর জীবনের শেষ ইচ্ছাপূরণ করেন ‘সাদা বুড়ো’। সান্টার কোলেই মারা যায় ওই শিশুটি।


দীর্ঘদিন ধরেই নক্সভিল সিটিতে সান্টার অভিনয় করে সকলের আশাপূরণ করে আসছেন এরিক স্মিট মাৎজেন। দীর্ঘদেহের অধিকারী ১৩৬ কেজির এরিকের পাকা দাড়ি দেখে সকলেই তাঁকে সান্টা বলেই চেনেন।


ঘটনার কথা স্মরণ করে এরিক জানান, কাজ থেকে সবে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। এর মধ্যেই হাসপাতালের এক নার্স তাঁকে ফোন করে গোটা বিষয়টি জানান। তিনি কালক্ষেপ না করে ১৫ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যান হাসপাতালে।



এরিক বলেন, মৃত্যু নয়, ওই শিশুটি ভয় পাচ্ছিল সে এবারের ক্রিশমাস হয়ত দেখতে পাবে না। অশ্রুমিশ্রিত চোখে এরিক বলেন, যখন আমি সেখানে পৌঁছাই, আমার কাজ ছিল, ছোট্টা শিশুকে ক্রিশমাসের আগাম শুভকামনা দেওয়া।


তিনি শিশুকে প্রশ্ন করেন, কেন তার মনে হচ্ছে যে এবছরের ক্রিশমাস দেখতে পাবে না? উত্তরে শিশুটি তাঁকে জানায়, সে আর বাঁচবে না। উত্তর শুনে প্রায় চমকে ওঠেন এরিক। কোনওমতে সামলে তিনি জানান, ক্রিশমাস না দেখার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, পরীরা তাঁর জন্য ইতিমধ্যেই উপহার পাঠিয়ে দিয়েছে।


একির বলেন, তাঁর ওই কথা শুনে আনন্দ পায় শিশুটি। অবিশ্বাসের চোখে যে জিজ্ঞেস করে, সত্যি! শিশুর মায়ের দেওয়া একটি উপহার এরিক ওই শিশুকে দেয়। তা পেয়ে আনন্দে ভরে ওঠে শিশুর মুখ। সে উঠে সান্টাকে জড়িয়ে ধরে...তারপরই সান্টার কোলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।


ঘটনার পর বিধ্বস্ত সান্টা-রূপী এরিক। জানান, শিশুর মৃত্যুর পরই তিনি হাসপাতাল থেকে প্রায় মুখ ঢেকে বেরিয়ে যান। এক সময় ভেবেছিলেন, আর সান্টার অভিনয় করবেন না। কিন্তু, কয়েকটি শিশুকে হাসতে দেখে তিনি পুনরায় শক্তি সঞ্চয় করেন। মার্কিন সামরিক বাহিনীতে কাজ করা এরিক বলেন, আমি নিজেকে বোঝাই, আমার কী দায়িত্ব তা মনে রাখতে হবে।


শিশুর ঘটনার কাহিনী গোটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে।