কোয়েট্টা: পাকিস্তানের কোয়েট্টায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা। মৃত ষাটেরও বেশি। আহত শতাধিক। তিন জঙ্গিরও মৃত্যৃ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ হামলার ঘটনাটি ঘটে। সেসময় কোয়েট্টার এই পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রায় ২০০ পুলিশ কর্মী উপস্থিত ছিল। দীর্ঘ পাঁচ ঘন্টা ধরে সেনা জওয়ান, পুলিশ ও জঙ্গিদের মধ্যে লড়াই চলে। সূত্রের খবর,  ৫-৬জন জঙ্গি প্রথমে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ঢুকে কয়েকজন পুলিশকর্মীকে পণবন্দি করে ফেলে। তারপর শুরু হয় গুলির লড়াই।

কোয়েট্টা সিভিল হাসপাতালের প্রবীণ চিকিৎসক ওয়াসিম বেগ জানিয়েছেন,  ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে যেকটি দেহ এসেছে বেশরিভাগই প্রশিক্ষণ নিতে আসা পুলিশকর্মীদের। বালুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মির সরফরাজ বুগটি মঙ্গলবার সকালে এই হামলার কথা স্বীকার করে নিয়ে জানিয়েছেন, সোমবার রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা নাগাদ কোয়েট্টার ওই পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রায় পাঁচ-ছজন জঙ্গির একটি দল ঢুকে পড়ে হামলা চালায়। তারা গিয়ে সেখানকার ছাত্রাবাসে হামলা চালায়। সেসময় সেখানে প্রক্ষিশন নিতে আসা বেশিরভাগ পুলিশকর্মীই ঘুমিয়ে ছিল।

এখনও পর্যন্ত এই হামলার দায় কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। তবে বালুচিস্তানের সেনা কম্যান্ডার জেনারেল শের আফগান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এক জঙ্গি গোষ্ঠী ও তাদের হ্যান্ডলারদের মধ্যে কথোপকথনের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সেখান থেকে মনে করা হচ্ছে, এই হামলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-জাঙভি গোষ্ঠী।



লস্কর-ই-জাঙভি নামের এই জঙ্গি গোষ্ঠীর মূল ঘাঁটি রয়েছে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে। এরা একাধিকবার বালুচিস্তানে সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়েছে। এই জঙ্গি গোষ্ঠীর মূল লক্ষ্যই  এলাকার সংখ্যলঘু সম্প্রদায় হাজারা শিয়ারা। যদিও কেন এই জঙ্গি গোষ্ঠী এবার পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে হামলা চালালো সেবিষয় এখনও কোনও নিশ্চিত খবর নেই সেখানকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতে।

আত্মঘাতী হামলার কুড়ি মিনিটের মধ্যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পৌঁছে যায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর একটি দল। এরা এসে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে। এরপর সেনা-জঙ্গি গুলির লড়াই চলে পরবর্তী পাঁচ ঘন্টা। রয়টার্স সূত্রে খবর, ঘটনাস্থল থেকে সেনা জওয়ানরা এক কিশোরের দেহ বের করে নিয়ে যাচ্ছিল। তাদের দাবি কিশোরটি জঙ্গি দলের সদ্যস ছিল। গুলি বিনিময়ের সময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। এই সংঘর্ষে মোট তিন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনার পর থেকে গোটা এলাকাজুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।